মাদারীপুরে অবৈধভাবে নদ থেকে বালু তোলায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২১, ১৬:২১ | আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৩:৫৪
বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই মাদারীপুরে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। অবৈধভাবে নদ থেকে বালু তোলায় ব্যাপক ভাঙ্গন, আতঙ্কে এলাকাবাসী এরই মধ্যে জেলার কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টারটির এক-তৃতীয়াংশ নদীগর্ভে ভেঙ্গে পড়েছে। নদী ভাঙ্গণে একটি মসজিদসহ বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘরও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গত ২০ বছরের বিদ্যালয়টির আরও দুটি ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়। নদীভাঙনের ফলে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা।
মাদারীপুরের কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে একাধিক স্থানে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বিলীন হয়ে গেছে উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের চর-গোহলপাতিয়া ও চর-কালকিনি গ্রামের অর্ধশত ঘরবাড়ি । টানা তিন বছর ধরে একই স্থানে বালু উত্তোলনে নদের পাড়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙ্গন। অপরদিকে নদী ভাঙ্গনে কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চরহোগলপাতিয়া গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫১নং চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টারটিও নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ে। গত বর্ষা মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু জিওব্যাগ ফেলে নদীভাঙনের চেষ্টা চালালেও পরবর্তীতে বর্ষা শেষে ভাঙন প্রতিরোধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ঘূর্নিঝর ইয়াসের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার করনে বিদ্যালয় ভবনটির এক-তৃতীয়াংশ নদীগর্ভে ভেঙে পড়ে। সে সময় একটি মসজিদসহ বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘরও নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। আতঙ্কে নদীর পাশ থেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন অনেকেই।
অপরদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় অসহায় পরিবারগুলোর অভিযোগ, রাতের আধাঁরে একযোগে ৪ থেকে ৬টি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জানালেও বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি কেউ। নদী ভাঙ্গনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মাঝে। প্রশাসনের কাছ থেকে বার বার আশ্বাস মিললেও সমাধান পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। নদী ভাঙনের হাত থেকে চরহোগলপাতিয়ার গ্রামের অবশিষ্ট বাড়ি-ঘর ও বিদ্যালয়ের অবশিষ্ট অংশ রক্ষা করতে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
১৫১নং চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোসা. মনোয়ারা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনটি নদীভাঙনের শিকার হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার জন্য দ্রুত নিরাপদ স্থানে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের জন্য কর্তৃপর্ক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা জানান,স্কুলটি নদী ভাঙন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে গতবছর বিদ্যালয়টি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদন হলেই মাদারীপুরের নদী ভাঙ্গন রক্ষাকল্পে কাজ করা হবে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন,নদী থেকে অবৈধবালু উত্তোলন বন্ধে নিয়মিত মামলা দিয়ে নেয়া হচ্ছে।
নিরাপদ স্থানে নতুন বিদ্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার ব্যবস্থা করা ও অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত