ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:০৬ | আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:৫৭
ইসরায়েলি ভূখণ্ডে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।এছাড়া দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি নৌঘাঁটিতেও প্রথমবারের মতো হামলা করেছে গোষ্ঠীটি। এসব হামলায় আহত হয়েছেন ১১ জন। সোমবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা “প্রথমবারের মতো” দক্ষিণ ইসরায়েলের আশদোদ নৌ ঘাঁটিতে হামলা করেছে। উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র এবং স্ট্রাইক ড্রোন ব্যবহার করে তেল আবিবের একটি “সামরিক লক্ষ্যবস্তুতেও” অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
এদিকে হিজবুল্লাহর হামলার মধ্যে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তেল আবিবের শহরতলীসহ মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর খবর দিয়েছে। সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা উত্তর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আটকে দিয়েছে। লেবানন থেকে ২৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
পরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিও জানায়, লেবানন থেকে ‘৩৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র’ নিক্ষেপ করা হয়েছে। এই হামলায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন “মাঝারি থেকে গুরুতর” অবস্থায় রয়েছেন বলে চিকিৎসা সংস্থাগুলো জানিয়েছে।
মধ্য বৈরুতে ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ২৯ জন নিহত হওয়ার একদিন পর হিজবুল্লাহর এই হামলার ঘটনা ঘটল। লেবাননের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে মতে, এই হামলায় অন্তত ৬৬ জন আহত হয়েছেন।
লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি এটিকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টার ওপর আক্রমণ হিসাবে আখ্যায়িত করে নিন্দা জানিয়েছেন। ইসরায়েলি এই হামলাকে যুদ্ধ শেষ করার জন্য “সকল প্রচেষ্টা এবং চলমান যোগাযোগকে প্রত্যাখ্যান করার সরাসরি, রক্তাক্ত বার্তা” বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।
আল জাজিরা বলছে, বাইডেন প্রশাসন যুদ্ধবিরতির জন্য কয়েক মাস ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে এবং মার্কিন দূত আমোস হোচস্টেইন গত সপ্তাহে এই অঞ্চলে ফিরে এসেছেন।
এদিকে লেবাননে হামলা অব্যাহত রয়েছে। লেবাননের সেনাবাহিনী বলেছে, দক্ষিণ লেবাননে একটি পোস্টে ইসরায়েলি হামলায় একজন লেবানিজ সেনা নিহত হয়েছেন।
সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, “আল-আমরিয়াহে লেবাননের একটি সেনা কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার ফলে একজন সৈন্য শহীদ হয়েছেন এবং অন্য আরও ১৮ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।”
গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে এখন পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি সেনা নিহত হয়েছেন। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানী বৈরুতের পাশাপাশি লেবাননজুড়ে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর অপারেটিভস, অবকাঠামো এবং অস্ত্রাগারকে লক্ষ্য করে এই হামলা চলছে।
হিজবুল্লাহও পাল্টা আঘাত হানছে। তবে লেবাননের সেনাবাহিনী এসব ক্ষেত্রে ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে না। তারা যা করছে তা হলো সিভিল ডিফেন্স বা জরুরি পরিষেবাগুলোকে সহায়তা পরিষেবা প্রদান করা।
মূলত লেবাননের সেনাবাহিনী বেসামরিক জনগণকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে এবং সেই কাজ করার ক্ষেত্রেও তাদের ওপর হামলা করছে ইসরায়েল। লেবাননের সেনাবাহিনীর জন্য এসব হামলা খুবই গুরুতর ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত