মহানায়কের মহাপ্রস্থান  

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৮ জুলাই ২০২১, ১১:০২ |  আপডেট  : ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:১৭

সারাবিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত-অনুরাগীদের কাঁদিয়ে চিরদিনের জন্য এ নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন কিংবদন্তী অভিনেতা দিলীপ কুমার। গত ৭ জুলাই বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া আটটায় মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। নায়ক দিলীপ কুমারের মৃত্যুতে উপমহাদেশসহ বিশ্বের চলচ্চিত্র জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়সহ বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান ও নেতৃবৃন্দ। ওইদিনই বিকাল ৫টায় তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুম্বাইয়ের জুহুতে দাফন করা হয়েছে।

দিলীপ কুমারের প্রকৃত নাম মোহাম্মদ ইউসুফ সারোয়ার খান। জন্ম ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর অবিভক্ত ভারতের পেশোয়ারে, যা বর্তমানে পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত। ভারত ভাগের পর তার পিতা সারোয়ার খান বোম্বেতে (বর্তমান মুম্বাই) থেকে যান। দিলীপ কুমার তার কিশোর বয়সেই কর্মজীবনের শুরু করেন। মুম্বাই থেক পুনে গিয়ে বৃটিশ সৈন্যদের জন্য পরিচালিত এক ক্যান্টিনে কাজ নেন তিনি। কিছুদিন পর ফিরে আসেন মুম্বাইতে। বাবার ফল ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। এ সময় তার সাথে পরিচয় হয় এক সাইকোলজিস্টের। তিনি তাকে পরিচয় করিয়ে দেন বোম্বে টকিজের মালিক দেবিকা রানীর সঙ্গে। দেবিকা রানী তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। সেই থেকে শুরু। প্রথম ছবি ‘জোয়ার ভাটা’ তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। প্রথমদিকের ছবিগুলো তেমন ব্যবসাসফলও হয়নি। ১৯৪৭ সালে তাঁর মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘জুগনু’ তার ভাগ্য খুলে দেয়। ব্যবসায়িক সাফল্য পায় ছবিটি। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তারপর একে একে অভিনয় করেছেন ৬৫টি চলচ্চিত্রে। জয় করে নিয়েছেন দর্শকদের হৃদয়। 

দিলীপ কুমার মুম্বাই চলচ্চিত্রের নায়ক হলেও তার খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া। দুনিয়াজুড়ে ছিল তার ভক্ত-অনুরাগী। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি সাফল্যের সূর্যকে স্পর্শ করতে পেরেছিলেন কৃতিত্বের সাথেই। ভাগ্য তাকে পৌঁছে দিয়েছিল সাফল্যের শিখরে। 

 কোনো কোনো মানুষ চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি করে যান এক অপূরণীয় শূন্যতার। দিলীপ কুমারের ইহলোক ত্যাগ তেমনি এক শূন্যতা সৃষ্টি করল। তিনি আর কখনো ফিরে আসবেন না। কিন্তু তার অভিনীত ছবিগুলো তাকে বাঁচিয়ে রাখবে যুগের পর যুগ। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাকে স্মরণ করবে সশ্রদ্ধ চিত্তে। আমরা এ কিংবদন্তী অভিনেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। সে সাথে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।  
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত