ভাঙ্গন রোধে আশ্বাস পাওয়া পর্যন্তই কাজ এগিয়েছে
ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে তিস্তার ভাঙ্গন
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৫২ | আপডেট : ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:২৭
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহিত খরস্রোতা তিস্তা নদী স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও খনন না করায় প্রতি বছর গিলে খাচ্ছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলী জমি আর শতশত বাড়ি ঘর। ইতোমধ্যে কাউনিয়ার মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে একটি মৌজা। বর্তমানে গদাই গ্রামে শুরু হয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন। গদাই গ্রামের অর্ধেক ফসলী জমি ও বেশ কিছু বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে নদীভাঙ্গন এলাকায় গিয়ে মানুষের সাথে কথা বলে জানাগেছে, প্রতি বছর বন্যা, নদী ভাঙ্গনে দিশে হারা মানুষ গুলোকে নদী ভাঙ্গন রোধে আশ্বাসের বানী শোনায় মন্ত্রী, এমপি, চেয়ারম্যান ও প্রশাসন। কাজের কাজ কিছুই হয় না। নদী ভাঙ্গনে ফসলী জমি আর বাড়ি ভিটা হারিয়ে পথে বসেছে শতশত মানুষ। তাদের দুঃখ দেখার কেউ নেই। তিস্তা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে। পানি কমার সাথে সাথে নতুন নতুন এলাকা ভাংছে। বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাই ও পাঞ্জরভাঙ্গা গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। এরই মধ্যে অনেকের বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এর আগে বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নের ৩শতাধিক বাড়ি ভিটাসহ প্রায় ৫০০ হেক্টর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। গদাই গ্রামে ভাঙ্গন রোধে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে আতংকে দিন কাটাচ্ছে নদী তীরবর্তি মানুষেরা। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে উপায় না পেয়ে তাঁরা বসতভিটা ভেঙ্গে অন্য স্থানে নিচ্ছেন।
২বছরের ব্যবধানে ফজর আলী (৭৩) কে তিনবার নদী ভাঙ্গনে বসতভিটা সরিয়ে নিতে হয়েছে। কৃষক ফজল মিয়া (৮০) দুদিন আগেও তার ঘর ছিল, এখন তাঁর ঘর নেই। দুটি টিনের ঘর ইতিমধ্যে অন্যর জমিতে নিয়ে গেছেন। ওসমান মিয়া বলেন, নদী ভাঙ্গনে আমার সব শেষ, এবারের ভাঙ্গনে ঘর তোলার কোন জায়গা পাচ্ছি না। গদাই গ্রামের ফুল মিয়া হাজি জানান, ভাঙ্গন আতংকে নির্ঘুম রাত কাটছে গদাই গ্রামের বাসিন্দাদের।
বর্তমান বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নদী ভাঙ্গন রোধে গার্ড ব্যাংক নির্মাণ ও নদী খননের আশ্বাস প্রদান করেছিলেন। সেই আশ্বাসের বাণী আজ নিরবে কাঁদে। নদী গর্ভে বাড়ি ও জমি বিলীন হয়ে যাওয়া রানা, রবিউল, রাজ্জাকসহ অনেকে জানান, সবাই শুধু আসে দেখে আশ্বাস দেয়, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। বালাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, তার এলাকায় প্রায় শতাধিক বাড়ি ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। টেপামধুপুর ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, তার এলাকায় প্রায় ২শতাধিক বাড়ি-ঘর ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রংপুর এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব গদাই গ্রামের নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান, ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রায় ৭০০মিটার এলাকা নদী ভেঙ্গেছে, এখানে ৭হাজার জিও ব্যাগ লাগবে। মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি ভাঙ্গন মোকাবেলার জন্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বরাবরে একটি ডিও লেটার প্রদান করেছেন ভাঙ্গন মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে, রংপুর পাউবোর বোর্ড কর্মকর্তারা আশ্বাস প্রদান করেছেন। আশা করছি সমস্যার সমাধান হবে।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত