বাগেরহাটে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের সময় হামলা, ইউপি চেয়ারম্যানসহ আহত ১৫

  বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২১, ১৯:০১ |  আপডেট  : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫০

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কম দেওয়ার অভিযোগে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের সমর্থকদের হামলায় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশাসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।রবিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের ডেউয়াতলা বাজারে চাল বিতরণের সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার রেহেনা বেগম, উপকারভোগী মিঠুরানী, অন্তস্বত্তা গৃহবধু লিপি আক্তার, ইলিয়াস হাওলাদার, কৃষ্ণ মাস্টার, নাদিরা বেগম, ইসহাক হাওলাদার, ইলিয়াস হাওলাদার, এনায়েত হাওলাদারের নাম পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে অন্তস্বত্তা গৃহবধু লিপি আক্তারসহ গুরুত্বর আহত ৪-৫জনকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ডিলারের স্বামী আরিফুল কবির বাচ্চু বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে শান্তিপূর্ণভাবে চাল দেওয়া চলছিল। এসময় স্থগিত হওয়া ইউপি নির্বাচনে জিউধরা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের সমর্থক মাসুদ রানা ও সেলিমের নেতৃত্বে কয়েকজন অতর্কিত হামলা করে। এতে চেয়ারম্যান, আমার স্ত্রী রেহেনা পারভীনসহ অন্তত ১৫জন আহত হয়।হামলাকারীরা আমাদের কিছু টাকাও নিয়ে যায়।

জিউধরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে ডিলার চাল বিতরণ করছিলেন। এর মধ্যে ৪টি বস্তায় ১৩কেজি চাল কম হয়।সকলের সাথে কথা বলে ২৮ কেজি ২‘শ৫০ গ্রাম চাল দেওয়ার কথা বলা হয়।উপকারভোগীরা সামান্য কম নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এভাবে চাল দেওয়া শুরু হলে হঠাৎ করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একদল লোক আমাদের উপর হামলা চালায় এতে আমি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার রেহেনা পারভীনসহ অন্তত ২৫-৩০জন আহত হয়।এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ কার্যক্রমের সহকারি ট্যাগ অফিসার ডেউয়াতলা কেসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিপ্লব কুমার মিস্ত্রি বলেন, বাজারে একটি কক্ষের মধ্যে আমরা চাল বিতরণ করছিলাম।২৫-৩০জনকে চাল দেওয়ার পরে হঠাৎ করে দুইপাশ থেকে কিছু লোক জোর পায়ে হেটে আমাদের উপর ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পরবর্তীতে চাল বিতরণ করা বন্ধ করে দিয়েছি।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান বলেন, আমি এই হামলার সাথে জড়িত নয়। সরকারি চাল দেওয়ার আগে বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশা আপত্তিকর কথা বলে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম রেজা, যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজনকে অপমান করেছেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি করে এবং সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে আমি দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেছি।এই সংঘর্ষে বাবুল খানসহ আমার তিনজন সমর্থক গুরুত্ব আহত হয়েছেন।খুলনা মেডিলেক কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য আমি তাদেরকে নিয়ে রওনা দিয়েছি।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, বিভিন্ন ধরণের ইনজুরি নিয়ে দুপুরের পরে জিউধরা এলাকার ৩জন নারী ও সাতজন পুরুষ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। আমরা তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি।

মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, চাল বিতরণের সময় সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের সমর্থকরা হামলা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।ফের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি আমাদের কাছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত