বাংলাদেশে পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২১ | আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৮
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে এখনই পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে অগ্রসর হতে হবে, যাতে দেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে যেতে পারে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বার্তায় তা জানানো হয়েছে।এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ ও তার সহকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না। তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে বাংলাদেশকে গুরুত্ব সহকারে বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানি বিবেচনা করার, যার মধ্যে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন অন্যতম।
গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের ভাই কার্ল পেজ পরবর্তী প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি এবং হাইব্রিড সিস্টেমে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন, যা নির্ভরযোগ্য, শূন্য-কার্বন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বার্জ-ভিত্তিক পারমাণবিক চুল্লিগুলি সাশ্রয়ী, কম রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প খাতকে কয়েক দশক ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম।
পেজ বলেন, পারমাণবিক শক্তি আজ আর বিশ্বব্যাংকের মতো বড় উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থাগুলোর কাছে নিষিদ্ধ বিষয় নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ ইতোমধ্যেই তাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে এ প্রযুক্তি গ্রহণ করছে।
তিনি উল্লেখ করেন, উদ্ভাবনে বাংলাদেশের শক্তিশালী রেকর্ড রয়েছে। তাই দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে পারে। এর সুফল হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা এবং শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
পেজ আরও বলেন, বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র এবং পারমাণবিক উদ্ভাবনে শান্তিপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি একটি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎ নীতি প্রণয়ন করেছে। এতে সৌর জ্বালানির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিকল্প নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কঠোর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই অপরিহার্য।
তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই এসব সুযোগ অনুসন্ধান করব। তবে প্রতিশ্রুতিশীল এসব প্রযুক্তি নিয়ে গভীর গবেষণা দরকার। কোনো সন্দেহ নেই—বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা দ্রুত হ্রাস করতেই হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সরকারের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত