বাংলাদেশে জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১০:৪৬ | আপডেট : ২২ মে ২০২৫, ১৪:৩৭

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপ জনসাধারণের মৌলিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করার ঝুঁকিতে ফেলেছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তাদের অভিমত, দেশটিতে বিচার ব্যবস্থার সংস্কার করার পরিবর্তে সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দমন করার নীতি গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার (২১ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এ কথা বলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের ১২ তারিখ সন্ত্রাসবিরোধী আইন ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের সভা, সমাবেশ, প্রকাশনা এবং অনলাইন প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আগের সরকারের আমলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে দমননীতি চালানো হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের মতো মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা লঙ্ঘন করবে অন্তবর্তীকালীন সরকার।
গুম বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের সরকারের আমলে গুমের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এছাড়া, গুম ঠেকাতে খসড়া আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে না।
এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া সংক্রান্ত বিষয়াবলির উপ-পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, আগের সরকারে আমলে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতের পর্যাপ্ত কাঠামো খসড়া আইনে নেই।
আওয়ামী লীগ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ হতাশাজনক উল্লেখ করে এইচআরডব্লিউ বলেছে, সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাদের বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের ওপর কার্যক্রম নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে সরকার থেকে জানানো হয়। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া কয়েক বছর ধরে চলতে পারে। এভাবে আসলে দলটিকে কার্যত নিষিদ্ধ করে দেওয়া হলো।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দলটি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই সক্রিয় ছিল। তাদের একটি বিশাল সমর্থকগোষ্ঠী রয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দলটির কোটি কোটি সমর্থকের বাকস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা হলো। স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও বাতিল করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের পক্ষে মত দিলেও দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধে সমর্থন দেয় না এইচআরডব্লিউ। তারা বলেছে, রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা মানুষের মৌলিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল। এর মাধ্যমে বিগত সরকারের ধাঁচে বিরোধীদের দমন নীতির চর্চা বহাল রাখা হচ্ছে।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত