আদালতে মামলা

বরগুনায় প্রবাসীর লাশ ফেরত আনার কথা বলে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র  

  হিমাদ্রি শেখর কেশব, বরগুনা:

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৪৪ |  আপডেট  : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০০:০৯

সৌদিতে কর্মরত সন্তানের লাশ এনে দেয়ার কথা বলে মায়ের কাছ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে বরগুনার বেতাগী উপজেলার উত্তর করুণা গ্রামের মো: মোশারফ খানের পুত্র জসিম খান ও তার সহযোগীরা। এ বিষয়ে জসিমসহ ৪ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন একই বাড়িতে বসবাসরত সৌদি প্রবাসী মৃত রুহুল আমিনের মাতা রোশনা বেগম। আসামিরা হলেন, করুণ গ্রামের মো: মোশারেফ খানের পুত্র ১. জসিম খান (৩৫), ২. শুভ খান (৩০), মো: মোশারেফ খানের স্ত্রী ৩. রেহানা বেগম (৫০) ও আমজেদ আলী খানে পুত্র ৪. মো: মোশারেফ খান (৬০)।

ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, বরগুনার বেতাগী উপজেলার উত্তর করুণা গ্রামের মো: মোশারেফ খানের পুত্র জসিম খান দীর্ঘদিন যাবৎ সৌদিআরব কর্মরত আছেন। সে সুবাদে একই আঙ্গিনায় বসবাসরত রুহুল আমিনকে সৌদি নেয়ার কথা বললে রহুল আমিন ও তার পরিবার রাজি হয়। পরবর্তিতে ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে জসিমের মাধ্যমে ২০২৩ সালে সৌদি আরব যান রুহুল আমিন। চুক্তি মোতাবেক কাজ ও পারিশ্রমিক পাওয়ায় জসিমের প্রতি রুহুলের পরিবারের আস্থা আরও বেড়ে যায়। বিগত ২ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি: মামলার ১নং আসামী জসিম খান ২নং আসামি শুভ খান ও ৩নং আসামি রেহানা বেগমের মাধ্যেমে রুহুল আমিনের মাকে জানান, সৌদি আরব বসে রুহুল আত্মহত্যা করেছে। ওর লাশ সৌদির একটা হাসপাতালে সংরক্ষিত আছে। একমাত্র পুত্রের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে মা রোশনা বেগম পাগল প্রায়। বুকের মাণিকের লাশটা অন্তত ফেরত আনার জন্য ও লাশটা এক নজর দেখার জন্য পরিবার যখন ব্যাকুল হয়ে পড়েন, ঠিক সেই সুযোগে প্রতারক জসিম অন্যান্য আসামিদের মাধ্যমে মৃত রুহুলের মাকে জানান, লাশ আনতে হলে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা প্রয়োজন হবে। পুত্র শোকে কাতর মা বিভিন্নভাবে ধার-দেনা করে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিঃ সকাল সাড়ে দশটার সময় জসিমের প্রেরিত অন্যান্য আসামিদের হাতে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা তুলে দেন। টাকা নেয়ার পর কয়েক মাস অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে দেখে মৃত রুহুলের মা জসিমের পরিবারের লোকজনের সাথে দেখা করতে গেলে তারা তাকে এড়িয়ে চলেন। লাশ এখনো কেনো আসছে না?  এমন কথা জিজ্ঞেস করলে জসিমের লোকজন কোনো সদুত্তর দিতে পারছিলেন না। এদিকে পুত্র কেনো আত্মহত্যা করলো? লাশ এখনো আসছে না কেনো? এমন নানা প্রশ্ন রুহুলের মাকে প্রতিনিয়ত কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিলো। এমন একটা সময়ে প্রায় ৪ মাস পর ২৫ এপ্রিল ২০২৫খ্রি: রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে অন্য একটা মাধ্যমে মৃত রুহুলের নিথর মরদেহটি তার বাড়িতে আসে। এসময় স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। তবে রুহুল আমিনের মৃত্যু রহস্যটি রহস্যই রয়ে গেছে। প্রতারক জসিম রুহুলের মৃত্যুর সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে পুত্রশোকে মুহ্যমান রুহুলের মাসহ স্বজনরা মনে করছেন। তারা টাকা ফেরত পাওয়াসহ প্রতারকদের শান্তি দাবি করছেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত