বঙ্গবন্ধু আমাদের ধ্রুবতারা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২১, ০৮:৪১ |  আপডেট  : ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৫:৪০

১৫ আগস্ট বাংলাদেশের জন্য শুধু শোকের দিন নয়, একটি কালিমালিপ্ত দিনও বটে। ১৯৭৫ সালের এদিনে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্য নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। একই সাথে ওরা হত্যা করেছিল বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী  বেগম ফজিলাতুননেসা মুজিব, তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজী জামালকে। একই দিনে ওর হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনি, তার স্ত্রী আরজু মনি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও তার এক পুত্রকে। ১৯৭৫ সালের এই হত্যাকান্ড তাই পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য, বর্বরোচিত ও নৃশংস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক রাজনৈতিক হত্যার নজির আছে। কিন্তু একটি জাতিরাষ্ট্রের জন্মদাতার সেদেশেরই সেনাবাহিনীর মুষ্ঠিমেয় সৈনিকের হাতে নিহত হওয়ার ঘটনা বিরল। 

দিনটি বাংলাদেশে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে প্রতিবছর পালিত হয়ে আসছে। এবার দিনটি বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে যাথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দৈনিক সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বেতার ও টেলিভিশনে দিনটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস, হাইকমিশন ও মিশনগুলোতেও বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী উদযাপনের কর্মূসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলি দিনব্যাপী কোরানখানি, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের কর্মসূচি নিয়েছে। 

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে ওরা চেয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রগতিকে স্তব্ধ করে দিতে। ওরা ভেবেছিল রক্ত-মাংসের শেখ মুজিবকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে পারলেই ওরা এদেশের ইতিহাস থেকে তাঁর নাম চিরতরে মুছে ফেলতে পারবে। কিন্তু একজন মানুষকে হত্যা করে যে তাঁর নীতি-আদর্শকে হত্যা করা যায় না, তাঁর কীর্তিকে মুছে ফেলা যায় না, বঙ্গবন্ধু তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। ছাঁই দিয়ে যেমন আগুনকে চাপা দিয়ে রাখা যায় না, তেমনি একটি হত্যাকান্ড দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে এদেশের মানুষের মন থেকে মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। এদেশের মানুষের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধুর যে অম্লান ছবি এখনও জ্বলজ্বল করছে, তা কখনোই মুছে ফেলা সম্ভব হবে না। 

আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ আর তলাবিহীন ঝুড়ি তো নয়ই, স্বলোপন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশ এখন গোটা বিশ্বের বিস্ময়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন এখন ঈর্ষণীয় হয়ে উঠেছে অনেক দেশের জন্য। আমরা এখন একটি সক্ষম জাতি। আর এটা সম্ভব হয়েছে জাতির জনকের কন্যার সুযোগ্য নেতৃত্বে। পিতার আদর্শের পতাকাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে তিনি এদেশকে বলিষ্ঠ হাতে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অচিরেই উন্নত দেশের তালিকায় নাম উঠাবে দেশবাসীর প্রত্যাশা সেটাই। 

সমুদ্রে চলাচলকারী জাহাজের নাবিকগণ আকাশের ধ্রুবতারা দেখে অন্ধকার রাতে গন্তব্যের দিক ঠিক করে নেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির আকাশের ধ্রুবতারা। তিনি আজ সশরীরে আমাদের মাঝে নেই সত্য। কিন্তু তিনি আমাদের জন্য ধ্রুব তারা হয়ে দিকের দিশা দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর আদর্শ যদি আমরা সঠিকভাবে উপলব্ধি ও অনুসরণ করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ কখনো দিকভ্রান্ত হবে না।

আজকের এই শোকাবহ দিনে আমরা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত