বিশ্ব ফুসফুস দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা

ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন জরুরি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:০৭ |  আপডেট  : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:২৫

বাংলাদেশে মৃত্যুর ১০টি প্রধান কারণের মধ্যে ৪টিই ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত, যার অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত পুরুষ রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশই ধূমপায়ী। ফুসফুস সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অত্যন্ত জরুরি। বিশ্ব ফুসফুস দিবস উপলক্ষ্যে আজ [২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা [প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন ক্যানসার ও বক্ষব্যাধি চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্যবিদ, সাংবাদিকসহ বিশেষজ্ঞগণ। প্রতিবছর ২৫ সেপ্টেম্বর উদযাপিত হওয়া দিবসটির এবছরের প্রতিপাদ্য “হেলদি লাংস, হেলদি লাইফ”। 

ওয়েবিনারে জানানো হয়, তামাক ব্যবহার এবং পরোক্ষ ধূমপান ফুসফুসের যেসমস্ত রোগের প্রধানতম কারণ তার মধ্যে ফুসফুস ক্যানসার, ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিস (সিওপিডি), যক্ষ্মা এবং অ্যাজমা বা হাঁপানি অন্যতম। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে, ২০১৭ অনুযায়ী বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ (৩৫.৩%) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৮১ লক্ষ মানুষ। গণপরিবহনে যাতায়াতের সময় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় আড়াই কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে দেশে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। তামাক ব্যবহারের উচ্চ প্রবণতা সার্বিক পরিস্থিতিকে আরো উদ্বেগজনক করে তুলছে।

ওয়েবিনারে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর ৪০ শতাংশেরও বেশি ঘটে ফুসফুস ও হৃদরোগে এবং এগুলো কমানোর অন্যতম কার্যকর উপায় হচ্ছে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০২১ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করে কিন্তু নানা কারণে খসড়াটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশোধনীটি পাসের দাবি ওয়েবিনারে জানানো হয়। 

ওয়েবিনারে বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, “ফুসফুসসহ সবধরনের ক্যানসারে চিকিৎসা ব্যয় এবং মৃত্যুহার অনেক বেশি। নীতিনির্ধারকদের কাছে এসব অসুস্থ মানুষের আর্তনাদ পোঁছাতে হবে, তাহলে তারা আইন সংশোধনকে অগ্রাধিকার দিবে।” 

বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ডা. আসিফ মুজতবা মাহমুদ বলেন, “ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।” 

ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক রিয়াজ আহমদ বলেন, “গণমাধ্যমের দায়িত্ব এবিষয়ে আরো বেশি সংবাদ প্রকাশ করা যেন নীতিনির্ধারকরা বুঝতে পারেন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ কেন জরুরি।” 

স্পটলাইটনিউজ২৪.কমের সম্পাদক মোর্শেদ নোমান বলেন, “তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক নীতি প্রণয়নে গণমাধ্যম সবসময়ই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে এবং এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে বিশ্বাস করি।” 

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। প্রজ্ঞা’র ডিজিটাল মিডিয়া প্রধান মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন কর্মসূচি প্রধান মো: হাসান শাহরিয়ার। ওয়েবিনারে গণমাধ্যমসহ তামাকবিরোধী সংগঠন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত