প্লাস্টিকের তৈরী মাদুর বিক্রির ধুম, বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:১৪ | আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:০০
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার হেলালিয়া হাটে প্লাস্টিকের তৈরী রং বে-রঙের বাহারী চোখ ধাঁধানো মাদুর বিক্রির ধুম পড়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এই হাটে প্লাস্টিকের তৈরী মাদুরের দোকান থেকে মাদুর কিনে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে গিয়ে বিক্রয় করছে। ক্রেতা-বিক্রেতার দিন দিন আনাগোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জমে উঠেছে এই প্লাস্টিকের তৈরী মাদুর হাট। সপ্তাহে দুই দিন রবিবার ও বৃহস্পতিবার কাক ডাকা ভোর থেকে দুপুর পযর্ন্ত খুচরা ও পাইকারী বেচা-কেনার ধুম পড়ে যায়। এখানকার হাতে তৈরী নিপুন বাহারী কারুকার্যে ভরা মাদুর গুলো মানসম্পন্ন এবং দামে কম হওয়ায় এর চাহিদা ব্যাপক।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলার পাতি দিয়ে তৈরী পরিবেশ বান্ধব মাদুরের দেশজুড়ে খ্যাতি থাকলেও হটাৎ করে গত দুই বছর আগে এই উপজেলার কাছে ত্রিমোহনী এলাকায় এবং আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের হেলালিয়া হাটে প্লাস্টিকের পাইপ তৈরীর মিল স্থাপন হওয়ার পর থেকে পাতি দিয়ে তৈরী মাদুরের পাশাপাশি প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে তৈরী মাদুরের চাহিদা দিন দিন বেশি হওয়ায় উপজেলার সান্দিড়া, তারাপুর ,কাজিপুর, ছাতনী, ঢেকড়া, প্রান্নাথপুর, শিমুলিয়া, মালশন সহ বিভিন্ন এলাকায় শত শত বেকার তরুণ-তরুনী প্লাস্টিকের মাদুর তৈরী করে বাজারে বা দোকানে বিক্রির মাধ্যমে ভাল আয় করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। বেকার থাকা মানুষগুলো স্বপ্ল পুঁজি বিনিয়োগ করে অল্প পারিশ্রম করে এক একটি পরিবার যৌথ ভাবে প্লাস্টিকের মাদুর তৈরী করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে।
প্লাস্টিক মাদুর তৈরীর প্রধান উপকরণ (পাইপ) মিল মালিকরা প্রতি গজে একশত বিশ টাকায় খুচরা বিক্রি করে। তিন/চার হাত লম্বা প্রতিটি প্লাস্টিক মাদুর পাইকারী ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা দরে ও নকশা ভেদে খুচরা ১০০ টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হয়। যা তৈরীতে খরচ পড়ে ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা। এ ব্যবসা জনপ্রিয় ও লাভজনক হওয়ায় পাতির তৈরী মাদুর ব্যবসা হুমকির মুখে পড়ার আশংকা রয়েছে। ব্যাপক চাহিদার কারনে উপজেলায় দুইটি প্লাস্টিক পাইপ তৈরীর মিল মাদুর তৈরীর প্রধান উপকরণ গুলো সরবরাহ করতে হিমসিম খাচ্ছে। এই শিল্পে জড়িত কাজিপুর গ্রামের বিপুল সরদার জানান, আমরা পারিবারিক ভাবে অনেক আগে থেকেই মাদুর তৈরী ও বিক্রির সাথে জড়িত। গত দুই বছর ধরে আমি প্লাস্টিক মাদুর তৈরী করে বাজারে খুচরা ও পইিকারী দরে বিক্রি করি। জায়নামাজের মাপে দুই বাই চার ফিট মাদুর আমি বেশি তৈরী ও বিক্রি করি। বর্তমানে এই ব্যবসা করে আমি স্বাবলম্বী হয়েছি। এই ব্যবসায় আয়ও ভাল । রংপুরের কাউনিয়া এলাকা খেকে প্লাস্টিক মাদুরের পাইকারী ক্রেতা রফিকুল ইসলাম জানান, আমি প্রায় দুই বছর ধরে এই এলকা থেকে প্লাস্টিকের মাদুর পাইকারী দরে কিনে খুলনায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাই। ওই এলাকায় এই মাদুরের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে আমার আয় ভালই হচ্ছে। ছাতনী গ্রামের গফুর সর্দার জানান, গত দুই বছর আগে প্লাস্টিক পাইপ তৈরীর মিল চালু করি। প্রথম দিকে চাহিদা কম থাকলেও বর্তমানে এই শিল্পের ব্যাপক চাহিদার কারনে আমার ব্যবসা ভাল হচ্ছে। এই শিল্পে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে প্রান্ত্রিক জনপদে এই ব্যবসার আরও প্রসার ঘটার সম্ভবনা রয়েছে। এই এলাকার প্লাস্টিকের পাইপের তৈরী মাদুর শিল্পে বেকার যুবকরা নিয়োজিত হয়ে আয়ের একটি পথ খুঁজে পেয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত