কাউনিয়ায় চরাঞ্চলের তিস্তা কৃষি পন্য
পরিবহনে পরিবেশ বান্ধব ঘোড়া গাড়ী কর্ম সংস্থানের সৃষ্টি করেছে
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:৫৪ | আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫২
রংপুরের কাউনিয়ায় ঘোড়া গাড়ি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরের জাহাজ হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। বিভিন্ন চরে ঘোড়া গাড়ির ব্যবহারের ফলে বেকারদের জন্য কর্র্র্ম সংস্থানের নব দিগন্তের সূচনা হয়েছে।
সরেজমিনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদী বেষ্টিত ১৭টি চরাঞ্চলের গ্রাম চর নাজিরদহ, চর সাব্দি, গোপিডাঙ্গা, আরাজি হরিশ্বর, চর গদাই, চর পাঞ্জরভাঙ্গা, তালুকশাহাবাজ, শনশনাটারি, শুভাঘাট, চর গনাই, হরিচরন শর্মা, গনাই, চর বিশ্বনাথ, হয়বতখাঁ চর, টাপুর চর, সদরা তালুক, চর আজমখাঁ ঘুরে দেখাগেছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় একমাত্র বাহন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে পরিবেশ বান্ধব ঘোড়ার গাড়ি। বালু আর শাখা তিস্তা নদীর রাস্তাসহ কাঁদা রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলী, ট্রাকসহ অনান্য বাহন যেতে পারে না সেই সকল রাস্তার জনপ্রিয় বাহন হিসেবে ঘোড়া গাড়ির কদর বেড়েছে। উপজেলার সিংহ ভাগ রবি শস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, পিয়াজ, মরিচ, রসুন, ডাল, কুমড়া এসব অর্থকারী ফসল চরাঞ্চলেই বেশী উৎপাদন হয়। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে যেতে না পারায় কম দামে ফড়িয়া দালালদের কাছে বাধ্য হয়েই চরেই বিক্রি করতে হতো। বর্তমানে ঘোড়ার গাড়ি চালু হওয়ায় কৃষক এখন তার উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে গিয়ে ন্যায্য দামে বিক্রয় করছে। কাউনিয়ায় এসব চরাঞ্চলে প্রায় ৪শতাধিক ঘোড়া গাড়ি রয়েছে। কাউনিয়ায় বালাপাড়া ইউপির গোপিঙ্গা গ্রামের ঘোড়া গাড়ি চালক আঃ রহমান জানায় এক সময় তার সংসার চলতো না, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে পরিবার পরিজন নিয়ে। ঘোড়া গাড়ি চালান শুরুর পর থেকে তার সংসারে এখন তেমন অভাব নেই। পল্লীমারী একতা গ্রামের ঘোড়া গাড়ি চালক গনি মিয়া জানায়, প্রায় ৫বছর থেকে সে ঘোড়া গাড়ি চালায়, তার দৈনিক আয় ৭থেকে ৮শত টাকা, তবে আলুর মৌসুমে আয় আরও বেশী হয়। একই কথা জানালেন ঘোড়া গাড়ি চালক আঃ রহিম ও নুর নবী। ঘোড়ার পিছনে তাদের এক থেকে দেড়শ টাকা খাদ্য বাবদ ব্যয় হয়। ঘোড়া গাড়ির চাকা তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে আছে। ঘোড়া গাড়ির ব্যাপারে হারাগাছ ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান পলাশ জানান তাঁর ইউনিয়নে দেড়শতাধিক ঘোড়া গাড়ি আছে। বালাপাড়া ইউপি মেম্বার আনোয়ার হোসেন জানান তার ইউনিয়নে ৮০ থেকে ৯০টি ঘোড়া গাড়ি আছে। টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান তার ইউনিয়নে শতাধিক ঘোড়া গাড়ি আছে, শহীদবাগ ইউপি মেম্বার সোলেমান মিয়া জানান তার ইউনিয়নে ৫০ থেকে ৬০টি ঘোড়া গাড়ি রয়েছে। আজ থেকে পাঁচ সাত বছর আগেও এ উপজেলায় ঘোড়া তেমন দেখা যেতনা, এখন প্রায় গ্রামে ঘোড়া গাড়ি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, ঘোড়া গাড়ি কৃষকের জন্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরাঞ্চলের জাহাজ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এবং বেকারদের জন্য কর্ম সংস্থানের নব দিগন্তের সৃষ্টি হয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত