পদ্মা সেতুর পশ্চিমে ফের অবৈধ ড্রেজার: লৌহজংয়ের মানচিত্র বড় হুমকিতে

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৪৪ | আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৪০

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে আবারও শুরু হয়েছে অবৈধ ড্রেজার তৎপরতা। রাতের আঁধারে পদ্মা সেতুর পশ্চিম পাশে ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর পিলারের কাছাকাছি, কোস্টগার্ড অফিস সংলগ্ন নদীতে বসানো হচ্ছে একের পর এক ড্রেজার। অবাধে বালু কেটে বিক্রি করা হলেও প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে এসব কর্মকাণ্ড। এতে দীর্ঘদিন পর পদ্মায় জেগে ওঠা নতুন চরের অস্তিত্ব আবারও বিলীন হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক মাস আগে পদ্মার বুকে বিশাল চড় জেগে ওঠায় লৌহজংবাসীর মাঝে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছিল। বহু বছর ধরে ভয়াবহ নদীভাঙনে উপজেলার প্রায় এক-চতুর্থাংশ ভূমি পদ্মায় তলিয়ে গেছে। এবারও যখন চর ভরতে শুরু করেছিল, মানুষ ভেবেছিল হারানো ভূমি ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালী মহল রাতের আঁধারে ড্রেজার বসিয়ে চরের পর চর কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই অবৈধ বালু বাণিজ্যে মাওয়ার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি সরাসরি জড়িত। বিশেষ করে মেদিনী মন্ডল ইউনিয়ন, লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ এলাকার: তৈয়ব বেপারী।কুমারভোগ ইউনিয়ন, লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ এলাকার: সালাম চোকদার।
কাঠালবাড়ি ইউনিয়ন, শিবচর, মাদারীপুর এলাকার: ডাবলু বেপারী, মান্নান বেপারী, আলীম শেখ, চুন্নু বেপারী, মামুন হাওলাদার ও আতাহার বেপারী। এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ।
এদের নেতৃত্বে প্রতিরাতে ৬-৭টি ড্রেজার রাত বারোটার পর বালু কেটে নিয়ে যায়। এমনকি একটি স্পিডবোটকে নিয়মিত টহল দিতে দেখা যায়, যা স্থানীয়দের ধারণা অনুযায়ী নৌপুলিশ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশীর্বাদ ছাড়া সম্ভব নয়।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের চোখের সামনে এমন তৎপরতা কিভাবে চলে? প্রশাসন কি তবে নীরব দর্শক হয়ে আছে?
অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা বন্ধে স্থানীয়রা ইতোমধ্যেই গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করেছেন এবং লৌহজং উপজেলা প্রশাসনের কাছে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পদ্মার চরে পুনর্গঠিত ভূমি ধ্বংস হলে শুধু লৌহজং নয়, পদ্মা সেতু ও আশপাশের অবকাঠামোও মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। নদীভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, যা জাতীয় স্বার্থের জন্যও হুমকিস্বরূপ।
এবিষয় লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নেছার উদ্দিন জানান নতুন করে অবৈধভাবে নদীতে কাটার লাগিয়ে যে চক্রটি বালু কাটছে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। লৌহজংয়ের মানচিত্র রক্ষায় লৌহজং উপজেলা প্রশাসন কাউকে ছাড় দেয়নি আর দেবেও না।
লৌহজংবাসী স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছে অবিলম্বে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা বন্ধ না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তারা মানচিত্র রক্ষার লড়াই চালাবে। তাদের একক দাবি প্রভাবশালী মহলের এই ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে, নাহলে প্রশাসনকেই দায় নিতে হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত