বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকার
নির্বাচন এককভাবে নাকি দলগতভাবে যা জানালেন তারেক রহমান

প্রকাশ: ৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৬ | আপডেট : ৭ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩৮

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর কোনো গণমাধ্যমে মুখোমুখি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারে লন্ডন থেকে তার দেশে ফেরা, আগামী নির্বাচনে দলের কৌশল, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও তাদের নেতাকর্মীদের বিচার, বাংলাদেশের নির্বাচনকেন্দ্রীক রাজনীতিসহ সমসাময়িক নানা বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরেছেন তিনি। আগামী নির্বাচনে বিএনপি এককভাবে নাকি অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে অংশ নেবে সেই বিষয়েও কথা বলেছেন তারেক রহমান।
অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকেই দেখা গেছে যে বিএনপির পক্ষ থেকে দ্রুত নির্বাচন দাবি করা হয়েছে। সরকার গড়িমসি করছে এ ধরনের অভিযোগও বিএনপির নেতারা করে আসছেন। তো এখন দেখা যাচ্ছে যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারিতে একটা নির্বাচনের সময় দিয়েছেন। তো ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে-আপনাদের আস্থা কতটা আছে তাতে?--বিবিসি বাংলার করা এমন প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি প্রথম থেকেই বলে আসছিলো যে যত দ্রুত নির্বাচনটি হবে, তত দ্রুত দেশের মধ্যে একটি স্থিতিশীলতা আসবে। দেখুন বাংলাদেশের মানুষ গত ১৭ বছর যাবৎ তাদের রাজনৈতিক অধিকার যেমন তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, তাদেরকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছিল।
যার ফলশ্রুতিতে আমরা সমাজে অনেকগুলো পর্যায়ক্রমিকভাবে স্পিলওভার ইফেক্ট বলতে যা বুঝায় অনেকগুলো খারাপ লক্ষণ দেখেছি। বেকার সমস্যা বেড়েছে, দরিদ্রতা বেড়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কৃষি ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়েছে। আমরা সেজন্যই বলেছিলাম যে, যত দ্রুত নির্বাচন হবে যত দ্রুত দেশের মালিক যারা অর্থাৎ জনগণ তাদের কাছে যখন সেই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে, তারা যখন সিদ্ধান্ত নেবে, অর্থাৎ দেশের মালিক যখন সিদ্ধান্ত নেবে দেশ কারা কীভাবে পরিচালিত করবে, তত দ্রুত দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, কারণ প্রকৃতভাবে নির্বাচিত একটি সরকার অবশ্যই জনগণের যে চাওয়া অর্থাৎ জনগণ যেভাবে চায় সেই বিষয়গুলোকে তারা এড্রেস (মোকাবিলা) করবে। ইয়েস, একটি নির্বাচন হলেই যে সব রাতারাতি সব ঠিক হয়ে যাবে তা না। সমস্যাগুলোকে যখন আপনি এড্রেস করবেন খুব স্বাভাবিকভাবেই ধীরে ধীরে সমস্যা কমতে শুরু করবে। আমরা আনন্দিত যে দেরিতে হলেও সরকার জিনিসটি উপলব্ধি করতে পেরেছেন। আমরা ডিসেম্বরের ভেতরে চেয়েছিলাম। উনারা ফেব্রুয়ারির ভেতরে এখন নির্বাচনটি করতে চাইছেন। আমরা আস্থা রাখতে চাই যে সরকার সে ব্যাপারে সব রকম উদ্যোগ পর্যায়ক্রমিকভাবে গ্রহণ করবেন।
এখন যেহেতু আপনারা বলছেন যে আপনারা আস্থা রাখতে চান, সেখানে নির্বাচন নিয়ে আপনার পরিকল্পনাটা কী? এককভাবে বিএনপি নির্বাচন করবে মানে দলগতভাবে নাকি জোটবদ্ধভাবে আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে নির্বাচন করবে?-সাক্ষাৎকারে বিবিসি এমন প্রশ্ন করলে উত্তরে তারেক রহমান বলেন, খুব ট্রিকি কোশ্চেন (কঠিন/জটিল প্রশ্ন) একটু। দেখুন আমরা প্রায় ৬৪টি রাজনৈতিক দল বিগত স্বৈরাচারের সময় যার যার অবস্থান থেকে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম কমবেশি একসঙ্গে কাজ করার জন্য। এমনকি আমরা যে ৩১ দফা দিয়েছি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের, এটি প্রথমে ২০১৬ সালে আমরা দিয়েছিলাম শুধু বিএনপির পক্ষ থেকে। পরবর্তীতে ভিশন টুয়েন্টি ছিল। যেটা পরবর্তীতে কিছুটা আরেকটু ডেভেলপ করে আমরা ২৭ দফা দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে আমরা আমাদের সঙ্গে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে তাদের সাথে পরামর্শ করে সবার মতামত নিয়ে আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। কারণটি হচ্ছে যে দলগুলোকে আমরা পেয়েছি আমাদের সাথে রাজপথের আন্দোলনে, আমরা চাই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে। সবার মতামতকে সঙ্গে নিয়ে আমরা রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে চাই।
মিত্র কারা হবে আসলে কারা সঙ্গে থাকবে আপনাদের নির্বাচনকে সামনে রেখে?-বিবিসি বাংলার করা এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ওই যে বললাম, কমবেশি সকলকে নিয়ে আমরা রাষ্ট্র গঠন করতে চাই।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত