দ্বিতীয় পরমাণু চুল্লি স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২২, ১০:৫৩ |  আপডেট  : ৪ মে ২০২৪, ০২:৩৪

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও বড় প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের (আরএনপিপি) দ্বিতীয় ইউনিটে রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভ্যাসেল (চুল্লিপাত্র)  স্থাপনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরমাণু বিজ্ঞানীরা এই চুল্লিপাত্রকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হার্ট বা হৃৎপিণ্ড বলে থাকেন।  চুল্লিপাত্রই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূলযন্ত্র, এর মধ্যেই শক্তি উৎপাদন হবে, যা কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হবে বিদ্যুৎ। ফলে ঐতিহাসিক এই প্রকল্পের সব ধরনের পারমাণবিক যন্ত্রপাতি স্থাপন কাজ শেষ হলো। এখন শুধু অপেক্ষা বিদ্যুৎ উৎপাদনের।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর বাসবভন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের বহুল আলোচিত এই প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভ্যাসেল (চুল্লিপাত্র) স্থাপনের উদ্বোধন করেন।

এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর আরএনপিপি’র প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভ্যাসেল (চুল্লিপাত্র) স্থাপনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঠিক একবছর ৮ দিন পর আজকে দ্বিতীয় ইউনিটের উদ্বোধনের পর প্রকল্পের পারমাণবিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ শেষ হলো। এটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ হবে পারমাণবিক জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী বিশ্বের ৩৩তম দেশ।

ভ্যাসেল (চুল্লিপাত্র) স্থাপনের অনুষ্ঠান ঘিরে প্রকল্প এলাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এনিয়ে রূপপুরসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকল দফতরে সাজ সাজ রব পড়েছে। প্রকল্পের প্রধান গেইটসহ সড়ক ও আবাসিক এলাকাতেও রঙিন ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। তুলে ধরা হয়েছে উন্নয়নের বাংলাদেশ।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র চত্বরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন রুশ আনবিক শক্তি সংস্থা- রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. আজিজুল হকসহ মন্ত্রিসভা ও জাতীয় সংসদের সদস্যরা। আর একে ঘিরে প্রকল্প এলাকায় বাংলাদেশ ও রাশিয়ানসহ বিভিন্ন দেশের দুই শতাধিক সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এসময় রাশিয়ান ফেডারেশনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সের্গেই কিরিয়েঙ্কো মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। ২৬০ একর জায়গার ওপর চলছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মযজ্ঞ। প্রকল্পের আবাসিক এলাকা রয়েছে আরও ৩২ একর।

প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ২০২৩ সালে পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিটও অনুরূপ বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। যা জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। প্রকল্প কাজ বাস্তবায়নে জনশক্তি প্রশিক্ষণসহ মোট ব্যয় হচ্ছে ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশ অর্থায়ন করছে রাশিয়া।  বর্তমানে প্রকল্পে ৩৩ হাজার লোক কাজ করছে। এদের মধ্যে  সাড়ে পাঁচ হাজার জন বিদেশি নাগরিক।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত