দুবলার চরের শুঁটকি নিয়ে গবেষণা
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ২০:৩৯ | আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫
শুঁটকি উৎপাদন কার্যক্রমের ওপর গবেষণা শুরু করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকশুঁটকি উৎপাদন কার্যক্রমের ওপর গবেষণা শুরু করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক । বঙ্গোপসাগরের পাড়ে সুন্দরবনের দুবলার চরে গড়ে উঠেছে বিশাল শুঁটকি পল্লি। লইট্টা, ছুরি, চিংড়ি, রূপচাঁদা, খলিসা, ভেদা ও পোয়াসহ অন্তত ১০০ প্রজাতির শুঁটকি তৈরি হয় এই পল্লিতে। বর্তমানে দেশের শুঁটকি অর্থনীতির কেন্দ্র এটি। এবার এই শুঁটকি উৎপাদন কার্যক্রমের ওপর গবেষণা শুরু করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) একদল গবেষক। এই গবেষণায় শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প ও শুঁটকি শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পর্যালোচনা করা হবে। মৎস্য প্রযুক্তি ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অধীনে এই গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপের আওয়তায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য প্রযুক্তি ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আরিফ বিল্লাহ গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনের দক্ষিণে, কটকার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং হিরণ পয়েন্টের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই দ্বীপটি ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণে কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে এবং তার প্রভাব কতদূর বিস্তৃত হচ্ছে তা পর্যালোচনা করা হবে এই গবেষণায়।’
গবেষণা কার্যক্রমটি সরাসরি তত্ত্বাবধান করছেন মৎস্য প্রযুক্তি ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোতাহের হোসেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুবলার চরে অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে জেলেরা সাগর থেকে মাছ ধরে আনেন এবং তা শুঁটকি করেন। আমাদের এই গবেষণা কার্যক্রমের উদ্দেশ্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্লেষণ করা। একই সঙ্গে দুবলার চরে উৎপাদিত শুঁটকির মান নিয়েও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। জায়গাটি যেহেতু বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ, সেখানে গবেষণা করা সময়, অর্থ ও কষ্ট সাপেক্ষ। আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছি। আগামীতে বড় পরিসরে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।’
ইতোমধ্যে ৯ থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনে অবস্থান করে দুবলার চরের শুঁটকি পল্লি থেকে প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও পরিদর্শন করেছেন গবেষণা দলের সদস্য মো. আরিফ বিল্লাহ ও ইফতেখার আহমেদ ফাগুন। পরিদর্শনকালে দ্বীপের শুঁটকি শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রায় ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদী-খাল রয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন নদী ও খালে এখন জাল ফেললেই মাছ ধরা পড়ছে।
প্রতি বছর আশ্বিন মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতের কাজ চলে। এবার শুঁটকি তৈরিতে তিন কোটি ২২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বন বিভাগ। গত মৌসুমে আহরিত হয়েছিল ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। তা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে তিন কোটি ২২ লাখ টাকা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত