ড. ইউনূস ও মোদির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় কি দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে?

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ০৯:২০ | আপডেট : ১০ জুন ২০২৫, ১৪:০২

ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশ ও ভারতের পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যেই ঈদ উপলক্ষে সৌহার্দ্যের চিঠি বিনিময় করলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি।
বাংলাদেশের মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা পাঠিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ত্যাগ, সহানুভূতি এবং ভ্রাতৃত্বের আদর্শের কথা বলেন। তিনি লেখেন, ‘ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আপনাকে এবং বাংলাদেশের মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা। ভারতে কয়েক কোটি মানুষ এই উৎসব পালন করেন। এই উৎসব আমাদের মধ্যে আত্মত্যাগ এবং ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়।’ চিঠিতে ইউনূসের সুস্থতা কামনা করেন তিনি।
উত্তরে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মূল্যবোধের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আপনার চিঠি দুই দেশের মূল্যবোধের প্রতিফলন। ঈদ মানুষকে কাছে আনে। আমাদের দুই দেশের পারস্পরিক শ্রদ্ধা দুই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। এই বছরের এপ্রিলে ব্যাংককে মোদি এবিং ইউনূসের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ হলেও দুই দেশের মধ্যে শীতলতা কমেনি। এর মধ্যেই বাংলাদেশের ক্রমাগত অভিযোগ, ভারতের সীমান্তরক্ষীরা পুশ-ইন করে সীমান্ত দিয়ে মানুষ ঢোকাচ্ছেন। এতে সম্পর্কে আরও দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
ভারতের প্রাক্তন আমলা এবং সাংসদ জহর সরকার ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘ইউনূস নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তার রাজনৈতিক স্বপ্ন আছে। তিনি ভারত বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। অন্যান্য অন্তর্বর্তী সরকার ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ায়। ইউনূস তা চান না। উনি ক্ষমতায় থাকতে চান। এটা এত পরিষ্কার যে, সম্পর্ক রাতারাতি ভালো হয়ে যাবে, এমনটা ভাবার কারণ নেই। সৌহার্দ্যের চিঠি আসলে লেখেন আমলারা। রাষ্ট্রপ্রধানরা একাধিক খসড়া থেকে একটি বেছে নেন। এটাও তেমনি।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ইমনকল্যান লাহিড়ী বলেন, ‘ভারতের কাছে ওই দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কতটা বৈধ, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ঈদের বার্তা প্রধানমন্ত্রী সবাইকে দিতে পারেন। বিশেষ করে, বাংলাদেশের মানুষকে উনি শুভেচ্ছা জানাতেই পারেন। কিন্তু এই চিঠি আদান প্রদানে কোনো কূটনৈতিক লাভ বা ক্ষতি হবে বলে আমি মনে করি না।’
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ভারসাম্যের নীতি রেখে চলেছে। একদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা এখনো হাসিনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। অন্যদিকে, ইউনূস সরকারের সঙ্গেও বিভিন্ন চ্যানেলে সম্পর্ক রাখা হচ্ছে। কূটনীতির ভাষায় একে ভারসাম্যের নীতি বা 'ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ' কৌশল বলা হয়। বিভিন্ন উৎসবে ভারতের চিঠি সেই কৌশলেরই একটি অঙ্গ বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদেরা। সূত্র: ডয়চে ভেলে
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত