জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়ার সোনালির বাবাকে পঞ্চগড় ডিসি দিলেন নতুন ইজবাইক

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:১০ |  আপডেট  : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০০:২৮

আজপাড়ায় বেড়ে ওঠা  ফেরদৌসি আক্তার সোনালী এখন জাতীয় নারী ফুটবল দলের গোল রক্ষক। তার এই অর্জন এখন তার পরিবারের নতুন করে বেঁেচ থাকার নতুন সূচনায় নিয়ে গেছে।তার পরিবারের পাশে এখন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন।    বাবা ফরুক ইসলামকে একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক কিনে দিলেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী। সোমবার পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নতুন এই ইজিবাইকের চাবি নিজ হাতে তার হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুমন চন্দ্র দাস, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল হক তারেক, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।ফরদৌসীর বাবা ফারুক ইসলাম একজন ভ্যান চালক। জাতীয় দলে খেলার ডাক পড়লে  বাড়ি থেকে বাবার ভ্যানে চড়েই শহরে আসতেন। এরপর পাড়ি দিতেন ঢাকায়।

এমন দূশ্য চোখে পড়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের খবরের শিরোনাম হয়ে ওঠেন ‘ আমি ভ্যান চালাই, আমার মেয়ে বিমানে চড়ে বিদেশে খেলতে যায়’। বাবা ফারুক ইসলামের এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ে দেশদেশান্তরে।  

দরিদ্র ফারুক ইসলাম পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বনগ্রামে। জীবনযুদ্ধে মেয়েকে মানুষ করেন ফারুক ইসলাম। কার খবর কে রাখে‘এরপর হয়ে ওঠে ফেরদৌসি আক্তার সোনালী জাতীয় নারী ফুটবল দলের এক সাহসী গোল রক্ষক হয়ে যান। ছড়িয়ে পড়ে তার জীবন গল্পের অজানা কাহিনী।

প্রতিবেদন প্রকাশের পর জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী ছুটে যান ফারুক ইসলামের বাড়িতে। তার পরিবারের খোজঁ খবর সহ বাড়ি ঘর পরিদর্শন করেন।এরপর বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন দৃষ্টি নন্দন পাকা ঘর সহ উর্পাজনের জন্য একটি ইজিবাইক কিনে দেয়ার প্রতিশ্রতি দেন তিনি।

ফারুক ইসলামের হাতে ইজবাইকটি দেওয়ার সময় জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী তার প্রতিক্রিয়ায়বলেন,জেলার একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উঠে আসা সোনালী তার অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখিয়ে জাতীয় পর্যায়ে অবদান রাখছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সুনাম কুড়িয়েছে। আমরা দেখেছি ফেরদৌসী পরিবারের দারিদ্রতাকে জয় করে আজ এখানে এসেছে।

 বাবা ভ্যান চালিয়ে উপার্জন করে। তাদের বাডড়িটিও জরাজীর্ণ। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আজ তার বাবাকে উপার্জনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি নতুন ইজিবাইক উপহার দেওয়া হয়েছে।’এরপরেও আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাদের টিনের জরাজীর্ণ ঘরটি সরিয়ে একটি নতুন  পাকা ঘরও নির্মাণ করে দিবো।'ইজিবাইক পেয়ে ফারুক ইসলাম আনন্দে উচ্ছসিত হন।  তিন বলেন ‘ঝড়-বৃষ্টি নিয়ে ভ্যান চালাতে হয়। তাতে আয়ও কম। সংসার ঠিক মত চালাতে কষ্ট হতো। এতা টানাপোড়েনের মাঝে ও মেয়েকে ফুটবলার হতে সাপোট করেছি। তবে  মেয়ে এখন জাতীয় দলে খেললেও আমার পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরেনি। আমার পরিবারের অবস্থা তুলে ধরলে জেলা প্রশাসক আমার পাশে দাঁড়ান এবং আজকে একটি নতুন ইজিবাইক উপহার দেন।আশা করি এখন রোদ বৃষ্টিতে তেমন  আর কষ্ট করতে হবেনা।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত