জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যেসব বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৪৪ |  আপডেট  : ১২ মে ২০২৪, ১১:২৫

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে জড়ো হচ্ছেন বিশ্বনেতারা। এ অধিবেশনে ১৪০টির বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এবারের অধিবেশনে জলবায়ু ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

দুই সপ্তাহ ধরে চলা বেশ কিছু বৈঠকের পর আজ মঙ্গলবার শুরু হতে যাচ্ছে উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক। জাতিসংঘের এই অধিবেশনের ওপর নজর থাকবে সবার।

এই অধিবেশন বিশ্বনেতা ও রাষ্ট্রপ্রধানদের পরবর্তী বছরের জন্য তাঁদের অগ্রাধিকার নির্ধারণ, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সহযোগিতার আহ্বান জানানো এবং প্রায়ই নিজেদের প্রতিপক্ষের কর্মকাণ্ডের সমালোচনার সুযোগ করে দেয়।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের নেতাদের জন্য প্রতিবছর এটি এমন একটি মুহূর্ত, যা কেবল বৈশ্বিক পরিস্থিতির মূল্যায়নই নয়, বরং অভিন্ন কল্যাণ ও আশু বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ করে দেয়।

এবার সাধারণ বিতর্কের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আস্থা ফেরানো ও বৈশ্বিক সংহতি পুনরুজ্জীবন: সবার শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থিতির জন্য ২০৩০ সালের অ্যাজেন্ডা এবং এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যকে ত্বরান্বিত করা’। এ ছাড়া অধিবেশনের ফাঁকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে।

১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ‘অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে’ মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক আইন ও সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনার আয়োজন করে থাকে। দিকনির্দেশনা-সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণে প্রস্তাব ও ঘোষণা পাসের ক্ষমতা রাখে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী, বর্তমানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আলোচনায় উঠছে না এমন আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয়গুলো মোকাবিলার দায়িত্বও রয়েছে সাধারণ পরিষদের।

সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের বিস্তৃত বার্ষিক বাজেট অনুমোদন করে এবং এর ছয়টি মূল কমিটির একটি বিশ্বজুড়ে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের তহবিলের বিষয়টি সরাসরি দেখভাল করে থাকে।

সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নেতারা অংশগ্রহণ করে থাকেন। ফলে এতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে।

গত বছরের আলোচনায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছিল। এ বছরের অধিবেশনেও ঘুরেফিরে এসব বিষয়ই প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। জোর দেওয়া হবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনের ওপর।

আগস্টে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত থমাস গ্রিনফিল্ড সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বেশির ভাগ পশ্চিমা দেশ প্রতিবেশী ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাশিয়ার ওপর ‘তীব্র চাপ’ প্রয়োগ করবে বলে তিনি আশা করছেন।

চীনকে ঘিরে উদ্বেগ, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সামুদ্রিক নিরাপত্তা, সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়া এবং মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলোও আলোচনায় স্থান পেতে পারে। বিশেষ করে কিছু পর্যবেক্ষক জাতিসংঘে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

আফ্রিকার সাম্প্রতিক সামরিক অভ্যুত্থানগুলো বিশেষ করে নাইজারের বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। পাশাপাশি সুদান ও ইথিওপিয়ার সংঘাত নিয়েও আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া আফগানিস্তানসহ ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মানবিক সংকটের বিষয়ও আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পারে। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত