চিকিৎসার আড়ালে যৌন নিপীড়ন, তদন্তপূর্বক বিভাগীয় শাস্তি চায় মানবাধিকার কমিশন
প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১৬:২৯ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪
‘চিকিৎসার আড়ালে ভয়ংকর যৌন নিপীড়ক ডা. আশরাফ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ আমলে নিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ বিষয়ে স্বপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে কমিশন। গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা আগামী ২৮ জুলাই কমিশনকে অবহিত করার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে বলা হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান জানান, প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে রাজধানীর হাজারীবাগের বেড়িবাঁধে অবস্থিত ১০ শয্যার শামসুননেছা আরজু মনি মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে চিকিৎসকসহ বহু নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন ডা. আশরাফ। এ পদের প্রভাব খাটিয়ে একাধিক নারী সহকর্মীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তিনি। বিভিন্ন অজুহাতে কাছে ডেকে যৌন হয়রানি করেন তিনি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানি করা তার নেশায় পরিণত হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সূত্রে উল্লেখ রয়েছে, ডা. আশরাফের যৌন হয়রানির শিকার হয়ে একাধিক নারী গত বছর নভেম্বরে ঢাকা বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তবে অদৃশ্য কারণে তদন্ত করা হয়নি। পরে ডা. আশরাফের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ৮-১০ জন নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ দিলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মুনীরুজ্জামান সিদ্দীকীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
গত এপ্রিলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। তবে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি অধিদপ্তর। গত ৬ মে এসব ভুক্তভোগী নারী ফের যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) আসিব আহসানের কাছে যান। তবে তিনি তাদের অভিযোগ গ্রহণ করেননি বলে প্রকাশিত প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক মিডওয়াইফ লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ডা. আশরাফের সঙ্গে ওই হাসপাতালের এক পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকার অনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এক দিন তিনি তাদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেললে তাঁকেও অনৈতিক প্রস্তাব দেন ডা. আশরাফ। তিনি রাজি না হওয়ায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। তাঁর বেতন চার মাস বন্ধ রাখেন।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী আয়াও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, ডা. আশরাফের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেওয়ার কারণে তাঁকে এই হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয়। তিনি জীবননাশের হুমকি দিচ্ছেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে হাজারীবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
এ বিষয়ে গৃহীত সুয়োমোটোতে উল্লেখ রয়েছে, শামসুননেছা আরজু মনি মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের যে অভিযোগ উঠেছে তা অত্যন্ত ঘৃণিত ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
আগামী ২৮ জুলাই এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত