চলতি মাসে ঘূর্ণিঝড়-বন্যার পূর্বাভাস, তাপমাত্রাও উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রির উপরে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২ এপ্রিল ২০২১, ০৯:৫৭ |  আপডেট  : ৭ মে ২০২৪, ২৩:০৪

আগামী দুদিন কমবে না গুমোট গরম। বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। এপ্রিল মাসের স্বাভাবিক আবহাওয়ায় এই গরম থাকবে পুরো মাস জুড়েই। তবে মাঝে মাঝে কালবৈশাখী ঝড়, বজ্রবৃষ্টি অথবা শিলাবৃষ্টি হলে কয়েকদিনের জন্য তাপমাত্রা কমতে পারে। এখন এমনিতেই শ্রীমঙ্গল,  বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও ঢাকায় তাপপ্রবাহ বইছে। এই মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে যেতে পারে বলে শঙ্কা আবহাওয়াবিদদের।

এদিকে এই গরমে বাড়ছে জ্বর,সর্দি, কাশি, ডায়রিয়ার মতো রোগ। একইসঙ্গে ভ্যাপসা গরমে কমে যাচ্ছে খাবারের রুচিও। এই অবস্থায় সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আবহাওয়া অধিদফতরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, এপ্রিল মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকতে পারে। এই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশিও হতে পারে। বিশেষ করে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। যাতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠে যেতে পারে তাপমাত্রা। এছাড়া অন্য এলাকায় ১ থেকে ২টি মৃদু অর্থাৎ ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অথবা মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ অর্থাৎ ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে।

এই গুমোট গরমে আর্দ্রতা কমে গিয়ে চলতি মাসে ১ থেকে ২টি নিম্নচাপও হতে পারে। এরমধ্য একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। 

এছাড়া এ  মাসে উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চলে ২ থেকে ৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি ধরনের বা তীব্র কালবৈশাখী ঝড় এবং দেশের অন্য এলাকায় ৪ থেকে ৫ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা বা মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। 

আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, ঝড়-বৃষ্টির সময়ে তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকতে পারে। এরপর আবার বেড়ে যেতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, গত কয়েকদিন দেশের বেশ কিছু জায়গায় বিশেষ করে রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড় হয়েছে, দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হয়েছে।এতে ওইসব এলাকার তাপমাত্রা কিছুটা কমেছিল। তাপপ্রবাহও কমে এসেছিল। কিন্তু এখন আবার তা বাড়তে শুরু করেছে। আর যেসব এলাকায় ঝড়বৃষ্টি হয়নি অথচ আকাশ মেঘলা ছিল সেখানে গুমোট গরম পড়েছে। এখন শ্রীমঙ্গল,  বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও ঢাকায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ আরও অন্তত দুদিন এমনই থাকতে পারে। তিনি বলেন, এই মাসের স্বাভাবিক আবহাওয়ায় তাপপ্রবাহ থাকবে আর মাসের মাঝামাঝি তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে৷ ঝড় বৃষ্টি হলে মাঝে মাঝে কমে আসবে কিছুটা। পরে আবার আগের মতো হয়ে যেতে পারে।

এদিকে আবহাওয়ার নিয়মিত পূর্বাভাসে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপ পশ্চিমবঙ্গ এবং এর আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এই লঘুচাপের প্রভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ী ভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।  এছাড়া দেশের কোথাও কোথাও  বিক্ষিপ্ত ভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্য এলাকা অস্থায়ী ভাবে মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

এদিকে করোনা মহামারির এই সময়ে করোনা উপসর্গ  ছাড়াও ঋতু পরিবর্তনের কারণে জ্বর,সর্দি, কাশি, ডায়রিয়ার মতো রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। এসব কারণ এবং ভ্যাপসা গরমে কমে যাচ্ছে খাবারের রুচিও। এই অবস্থায় সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের ডিন ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, করোনা ছাড়া ঋতু পরিবর্তনের জন্য এখন এসব রোগের দেখা মিলছে প্রচুর। করোনার জন্য যেমন মাস্ক পরতে হবে, বার বার হাত ধুতে হবে, প্রচুর পানি জাতীয় খাদ্য খেতে হবে। একইভাব এসব রোগের উপসর্গ আছে এমন সবাইকে আমরা একই পরামর্শ দিচ্ছি। খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্যই বাইরের খাবার নয়। ঘরে তৈরি খাবারই এই সময় সবচেয়ে নিরাপদ। এছাড়া রুচির কমে যাবার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেলে উপকার হবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত