গো-খাদ্য সংকট নিরসনে নেপিয়ার ও পাকচং ঘাস চাষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ১৭:১৮ |  আপডেট  : ২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৮

কাউনিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গত কয়েক বছরে ছোট বড় মিলিয়ে শতাধিক দুগ্ধ ও গরুর খামার গড়ে উঠায় গো-খাদ্য সংকট নিরশনে বিদেশী নেপিয়ার ও পাকচং ঘাস চাষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। ঘাস চাষ করে বাজিমাত করেছে তালুকশাহাবাজ গ্রামের খামারী ইন্দ্রজিৎ ভুট্টু।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খামারীদের কাছ থেকে জানাগেছে বছরের একটা সময় গো খাদ্য সংকটে তাদের পরতে হয় সেই সংকট নিরশনে তারা নেপিয়ার ও পাকচং ঘাস চাষ করছে। ইদ্রজিৎ ভুট্টু জানান নেপিয়ার ঘাস দুগ্ধ জাত গাভীকে খাওয়ালে বেশী পরিমানে দুধ পাওয়া যায়, এছাড়াও গার্ভবতী গরুকে এ ঘাস খাওয়ালে বাছুর অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পায় এবং স্বাস্থ্যবান হয়। এসব কারনে এ ঘাসের জনপ্রিয়তা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি ঘাস বানিজ্যিক ভাবে অনেকে চাষ করছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সিঞ্চিতা রহমান জানান ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রজেক্ট এর আওতায় ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বর্তমানে প্রায় প্রতিটি গরুর খামারী এ ঘাসের চাষ করছে। 

এছাড়াও প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে কাটিং চারা বিভিন্ন চাষির মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তালুকশাহাবাজ গ্রামের বড় খামারী ইন্দ্রজিৎ ভুট্টুসহ অনেকে জানান তারা বেশ কয়েক বছর থেকে উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের পরামর্শে নেপিয়ার ও পাকচং ঘাস চাষ করে আসছে। তাদের দেখাদেখি আনেকেই এখন এ ঘাস চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ঘাসের চাহিদা বৃদ্ধি ও ভাল দাম পাওয়ায় অনেকেই এ ঘাস চাষে ঝুকে পড়ছে। এ ঘাস চাষে তেমন কোন পুজির প্রয়োজন হয় না। তা ছাড়া উৎপাদন ব্যায় ধান চাষের চেয়ে তুলনা মুলক অনেক কম। ভুট্টু জানান, দুগ্ধ খামার প্রতিষ্ঠার পর থেকে গো-খাদ্যের সংকটে ছিল, সে লালমনিরহাট মেলিটারী ফার্ম ও গাইবান্ধা থেকে কাটিং চারা এন চাষ শুরু করেন, বর্তমানে ৯২শতক জমিতে ঘাস চাষ করার পর থেকে এখন আর সংকট নেই। ঘাস না থাকলে তার খামারের জন্য ২ থেকে ৩ লাখ টাকার ঘাস কিনতে হতো। তিনি জানান ঘাস একবার লাগালে আর লাগাতে হয় না। ঘাসের গোড়া থেকে এক ফিট উপড়ে কাটলে পড়ে সেখান থেকে আবার ঘাসের আগা বের হয়। উপজেলার দরিদ্র চাষীদের পৃষ্টপোষকতা করলে এবং পরিত্যাক্ত খাস জমিতে লীজের মাধ্যমে ঘাস চাষের ব্যবস্থা করলে এলাকায় গো-খাদ্য সংকট থাকবে না এবং কৃষকের বাড়তি আয়ের উৎস তৈরীসহ দুগ্ধ উৎপাদনে অগ্রনী ভুমিকা রাখবে।

উপজেলা প্রণী সম্পদ বিভাগ জানায় রংপুর বিভাগের মধ্যে কাউনিয়া উপজেলা ইতি মধ্যে দুগ্ধ উৎপাদনে প্রথম স্থানে রয়েছে। এ উপজেলায় সরকারী বে-সরকারী মিলে প্রায় ২২হেক্টর জমিতে নেপিয়ার ও পাকচং ঘাস চাষ হয়েছে। দুগ্ধ উৎপাদনের এ হাড় ধরে রাখতে সরকারী ভাবে এ ঘাস চাষে খামারীদের প্রনদনা প্রদান সহ ব্যাংক ঋণ প্রদানের ব্যাবস্থা করলে চাষিরা আরও উৎসায়ীত হবে। ইতি মধ্যে ঘাস বাজারজাত করন শুরু হয়েছে। কাউনিয়ায় দিন দিন ঘাস চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত