কী আর বলমু স্যার, জোশ চলে আসে- হুশ থাকে না: জিজ্ঞাসাবাদে মাদানি
প্রকাশ: ৮ এপ্রিল ২০২১, ১১:২৯ | আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৪
রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেয়া এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ‘শিশুবক্তা’ হিসেবে খ্যাত রফিকুল ইসলাম মাদানিকে নেত্রকোণা থেকে আটক করার পর হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাব।
জিজ্ঞাসাবাদে মাদানি বলেন, ‘কী আর বলমু স্যার, জোশের কারণে অনেক সময় হুঁশ থাকে না। ওয়াজের মঞ্চে উঠলে শরীরে একটা জোশ চলে আসে। তখন আর নিজেরে ধরে রাখা যায় না। অনেক কিছু না বুঝেই বলে ফেলছি। আর এমন হবে না। এবারের মতো আমারে মাফ করে দেন।’
এটি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম।
খর্বকায় ও শিশুতোষ কণ্ঠের অধিকারী হওয়ায় রফিকুল ইসলাম মাদানিকে অনেকে ‘শিশুবক্তা’ বলে মনে করলেও তিনি নিজে দাবি করেছেন, তিনি মোটেও শিশু নন। তার বয়স ২৬ বছর বলেও তিনি দাবি করেন।
এর আগে ২৫ মার্চ মতিঝিল এলাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরবিরোধী মিছিল ও ভাঙচুরের সময় রফিকুল ইসলাম মাদানিকে আটক করেছিল রমনা থানা পুলিশ। সেখানেও তিনি মৌখিক আশ্বাস দিয়েছিলেন, আর এমন উসকানিমূলক বক্তব্য দেবেন না। সে কথা না রাখার কারণ জানতে চাইলে মাদানি র্যাবকে বলেন, পুলিশের আটকের বিষয়টি তিনি ‘সিরিয়াসলি’ নেননি। ভেবেছিলেন, জনপ্রিয়তার কারণে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে না।
মাদানি নেত্রকোণার একটি মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে ঢাকার বারিধারার জামিয়া মাদানিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করলেও কোরআন চর্চার চেয়ে তার জনপ্রিয়তার দিকে ঝোঁক বেশি বলে মনে করেন জিজ্ঞাসাবাদের দায়িত্বে থাকা র্যাবের একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলেন, ওয়াজে তার আলোচনার মূল বিষয় থাকে সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যু। যেকোনো ওয়াজে তার উদ্দেশ্যই থাকে উপস্থিত মুসল্লিদের উত্তেজিত করে জনপ্রিয়তা অর্জনের চেষ্টা করা।
জিজ্ঞাসাবাদে রফিকুল ইসলাম মাদানির একটি কথিত বিয়ে বিষয়েও জানতে পারে র্যাব। খায়রুল ইসলাম জানান, ২০১৯ সালের শেষের দিকে তিনি তার এক আত্মীয়কে গোপনে কলেমা পড়ে বিয়ে করেন। তাদের এই বিয়ের কোনো কাবিননামা করা হয়নি। দুই পরিবারের কেউই এই বিয়ের কথা জানতেন না।
মামুনুল হকের রিসোর্ট-কাণ্ডের পর ভীত হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে রফিকুল ইসলাম মাদানি তার মা ও পরিবারের স্বজনদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ফুলপুরের রহিমগঞ্জে ওই নারীর বাড়িতে যান। কিন্তু মাদানিকে পছন্দ না হওয়ায় ওই নারীর বাবা বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
মাদানির মুঠোফোনে পর্নো ভিডিও
রফিকুল ইসলাম মাদানির কাছ থেকে জব্দ করা মুঠোফোনে বেশ কিছু পর্নোগ্রাফিক ভিডিও পেয়েছেন তদন্তকারী র্যাব কর্মকর্তারা। তা ছাড়া মাদানি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে নানান জনকে অশ্লীল ছবি পাঠাতেন বলেও প্রমাণ পেয়েছে র্যাব।
এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে বুধবার রাতেই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করতে পারে র্যাব।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত