পার হচ্ছে বাঁশের সিঁড়ি দিয়ে

কালকিনিতে  প্রায় দশ কোটি টাকার দুই সেতু কোন কাজে আসছে না

  এসআর শফিক স্বপন মাদারীপুর 

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:২০ |  আপডেট  : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০৮

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের শাখা নদের উপরে অপরিকল্পিতভাবে প্রায় দশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না। এতে করে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এখন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এদিকে সংযোগ সড়ক না থাকায় বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে একটি সেতু পাড় হচ্ছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও কালকিনি এবং ডাসার উপজেলায় কোটি-কোটি ব্যয়ে ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মান করলেও কোন প্রকার কাজে আসছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে দুই বছরের বেশি একইস্থানে চাকুরি না করার বিধান থাকলেও এসব নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে প্রায় চার বছর একই উপজেলায় উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে চাকুরি করে আসছেন মো. রেজাউল করিম। তাই তিনি একইস্থানে দীর্ঘ কয়েক বছর চাকুরি করার সুবাদে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করে আসছেন। অপরদিকে তিনি এখানে যোগদানের প্রায় চার বছরের মধ্যে কয়েকবার বদলীর আদেশ হলেও তিনি অদৃশ্য শক্তির বলে বহালতবিয়তে রয়েছেন। ফলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারন জনগনের মাঝে। তবে অপরিকল্পিতভাবে (এল.জি.ইডি) সরকারের কোটি-কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মান করলেও সাধারন জনগনের কোন প্রকার কাজে না আসার ব্যর্থতার দায়ে কর্তৃপক্ষের কাছে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমকে এ উপজেলা থেকে দ্রæত অপসারনের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক, ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল। আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। 

কালকিনি উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের মিয়ারহাট বাজার সংলগ্ন আড়িয়াল খাঁ নদের একটি শাখা নদের উপরে ৪ কোটি ৯৪ লাখ ৫৯ হাজার ৩’শ ৭৬ টাকা ব্যয়ে ও উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের সূর্য্যমনি বাজরের পাসে আড়িয়াল খাঁ শাখা নদের উপরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে আলাদা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানর মাধ্যমে কয়েক বছর পূর্বে ওই দুইটি সেতুর নির্মান কাজ শেষ করেন উপজেলা এলজিইডি। ওই সেতু দুইটির নির্মান কাজ কয়েক বছর পার হলেও একটি সেতুর দুই পাসে নামে মাত্র (সামান্য কিছু) বালু দিলেও অন্য একটি সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করেই ফেলে রাখা হয়। এতে দুই পাড়ের চারটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ এখন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এদিকে সংযোগ সড়ক না থাকায় বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে একটি সেতু পাড় হচ্ছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও কালকিনি এবং ডাসার উপজেলায় কোটি-কোটি ব্যয়ে ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মান করলেও কোন প্রকার কাজে আসছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এদিকে দুই বছরের বেশি একইস্থানে চাকুরি করার বিধান থাকলেও এসব নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে প্রায় চার বছর (গত ২১ সালের এপ্রিল মাসের ১১ তারিখ) থেকে একই উপজেলায় উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে চাকুরি করে আসছেন মো. রেজাউল করিম। তাই তিনি একইস্থানে দীর্ঘ কয়েক বছর চাকুরি করার সুবাদে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করে আসছেন। অপরদিকে তিনি এখানে যোগদানের প্রায় চার বছরের মধ্যে কয়েকবার বদলীর আদেশ হলেও তিনি অদৃশ্য শক্তির বলে বহালতবিয়তে রয়েছেন। ফলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারন জনগনের মাঝে। তবে অপরিকল্পিতভাবে (এল.জি.ইডি) সরকারের কোটি-কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মান করলেও সাধারন জনগনের কোন প্রকার কাজে না আসার ব্যর্থতার দায়ে কর্তৃপক্ষের কাছে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমকে এ উপজেলা থেকে দ্রæত অপসারনের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক, ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ, কৃষক জলিল ও জব্বার, ব্যবসায়ী সাদিক ও নাজমুল, শিক্ষার্থী মাসফিক ও তাওসিফ, ইউপি সদস্য সমিরসহ বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করা সেতুতে বাঁশের সিড়ি দিয়ে পার হতে হচ্ছে। আসলে এর ব্যর্থতা একইস্থানে প্রায় চার বছর চাকুরি করা উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমের। তাই আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে তার দ্রæত অপসারন করার দাবী যানাই। তবে আমরা সুনেছি তার কয়েকবার বদলী হলেও রেজাউল স্যারের উপরের ক্ষমতা থাকায় বদলীর আদেশ বাতিল করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ঠিকাদার বলেন, একইস্থানে দুই বছরের বেশি সময় চাকুরি না করার বিধান থাকলেও উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম কিভাবে একইস্থানে প্রায় চার বছর চাকুরি করছেন আমরা বুঝতে পারছিনা। তবে একইস্থানে বেশি দিন চাকুরি করলে অনিয়মই নিয়মে পরিনত হয়। 

উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, জনগনের সমস্যার সমাধান হবে। তবে আমি কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় এখানে আছি।  
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, ওই সেতু দুইটির সংযোগ সড়ক নির্মান করার বিষয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। আশাকরি দ্রæত এর সমাধান হবে। 
এ ব্যাপারে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বাদল চন্দ্র কৃত্তনীয়া বলেন, এখন থকে সেতুর সংযোগ সড়কের কাজসহ সকল ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ দ্রæত গতিতে হবে। তবে আশাকরি ফেব্রæয়ারি মাসের ভিতরে কালকিনি উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম এ উপজেলা থেকে চলে যাবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত