কালকিনিতে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ কারেন্ট জাল

  শফিক স্বপন মাদারীপুর

প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২১, ১৫:২১ |  আপডেট  : ১৮ মে ২০২৪, ০৬:৪৪

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রকাশ্যে অবৈধ কারেন্ট জাল অবাধে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব জাল দিয়ে বিভিন্ন নদ-নদী ও খাল-বিলে দেশীয় প্রজাতির ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন করা হচ্ছে। বর্ষার শুরু থেকে এসব জাল দিয়ে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। তবে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর আরও বেড়েছে এ নিষিদ্ধ জালদিয়ে মাছ নিধন। এদিকে এ অবৈধ জাল বিক্রির ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য অফিসের ভূমিকা রয়েছে নিরব। এ কারনে অবৈধ ব্যবসায়ীরা হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। আজ সোমবার সকালে এ চিত্র দেখা গেছে উপজেলার খাঁসেরহাট বাজারে। 
সরেজমিন সুত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিরব ভূমিকা পালন করায় উপজেলার খাঁসেরহাট, মিয়ারহাট, সমিতিরহাট, কালকিনি পুরান বাজার, শশিকরহাট ও গোপালপুরহাটসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রকাশ্যে দেদারছে বিক্রি করা হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ক্ষুদ্র জাল ব্যবসায়ী জানান, কালকিনি উপজেলার কারেন্ট জালের বড় ব্যবসাকেন্দ্র সদরের কালকিনি পুরান বাজার। এ খান থেকে প্রতিদিন কারেন্ট জাল ছোট ব্যবসায়ীরা পাইকারি মূল্যে কিনে নিয়ে যান। পরে বিভিন্ন হাটবাজারে এসব জাল খুচরা দামে বিক্রি করা হয়। 

বেশ কয়েকজন জাল ক্রেতা বলেন, কালকিনি উপজেলার গোপালপুরহাট সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার বসে। এ দুই দিন প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীরা চটে করে, আবার কেউ দাঁড়িয়ে কারেন্ট জাল বিক্রি করেন। এভাবে এ হাটসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজে অবাদে বিক্রি হচ্ছে কারেন্ট জাল। তবে উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা স্বন্দীপন মজুমদার ও তার কর্মচারীরা নিরব ভূমিকা পালন করায় অবৈধ ব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ্যলক্ষ্য টাকা।  

এদিকে এ উপজেলায় আড়িয়ালখাঁ ও পালরদী নদীসহ অসংখ্য খাল-বিল রয়েছে। এসব জলাশয়ে এখন যথেষ্ট দেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। বর্ষায় এসব নদী-নালা, খাল-বিলে মাছ ডিম ছাড়ায় প্রচুর রেণু-পোনা জন্ম নিয়েছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন হাটবাজারে কারেন্ট জালের বিক্রি বেড়ে গেছে। খুচরা ব্যবসায়ী আবুল বলেন, ‘কারেন্ট জাল বিক্রি অবৈধ কি না, জানি না। তবে অনেকেই বিক্রি করেন। তাই আমিও করছি।’

বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের আউলিয়ারচর গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের মানুষ কারেন্ট জাল কিনে খাল-বিল, নদী-নালায় ব্যাপক হারে মাছ ধরছে। এভাবে ধরলে মাছের বংশবিস্তার হবে না।

কালকিনি উপজেলা মৎস্য সমিতির সভাপতি মোঃ রেজাউল করিম ফরাজী বলেন, এ উপজেলায় আড়িয়ালখাঁ ও পালরদী নদীসহ অসংখ্য খাল-বিল রয়েছে। এসব নদী ও বিলসহ ছোট-বড় সব জলাশয়ে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে সব ধরনের মাছ ধ্বংস করা হচ্ছে। নিষিদ্ধ হলেও প্রকাশ্যে এসব জাল পাওয়ার কারণে মানুষ অজান্তেই মৎস্য সম্পদের বিরাট ক্ষতি করছে।

কালকিনি উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা স্বন্দীপন মজুমদার বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের সহযোগীতায় জাল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিব। 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, কারেন্ট জাল বিক্রি করা সম্পূর্ন অবৈধ। তাই আমরা এ অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করবো।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত