কাউনিয়ায় সাপসহ বিভিন্ন প্রাণীর কল্যাণে কাজ করাই মিমের লক্ষ্য

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি  

প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৪০ |  আপডেট  : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:০৫

জীব বৈচিত্র রক্ষার নেশায় চাকরি ছেড়ে সাপসহ বিভিন্ন প্রাণীর কল্যানে কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের মীরবাগ শঠিপাড়া গ্রামের রাকিব আল ইসলাম মিম। গড়ে তোলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্নেক রেসকিউ এন্ড ওয়াইল্ডলাইফ এ্যাওয়ারনের্স অর্গানাইজেশন রংপুর।

সরেজমিনে গিয়ে তারসাথে কথা হলে তিনি জানান, ২০১৫ সালের এক বর্ষার সন্ধ্যায় নিজের বাড়ির সামনে একটি কালো অচেনা সাপ দেখে চমকে ওঠেন। পরে সাহসিকতার সঙ্গে সাপটির ছবি তুলে শুরু করেন সাপটির পরিচয় জানার প্রচেষ্টা। অনলাইনে খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারেন, এটি ছিল মারাত্মক বিষধর কালচে (ধিষষ’ং শৎধরঃ) সাপ। সেইদিন থেকেই রাকিবের সাপ নিয়ে পথচলা শুরু। কোথাও সাপ কিংবা বিপন্ন প্রাণির সন্ধান পেলে ছুটে যান সেখানে। সাপসহ যে কোনো প্রাণীর কল্যাণে কাজ করাই তার লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। তিনি অনলাইনে সর্পবিশারদদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সাপ চিনতে শেখেন, সংগ্রহ করেন বিভিন্ন পিডিএফ বই ও প্রশিক্ষণমূলক ভিডিও। সাপে কাটা রোগীদের মৃত্যু অনেকাংশেই সচেতনার অভাবে ঘটে, তা উপলব্ধি করেন। তাই শুরু করেন সচেতনতা কার্যক্রম। একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন। কোথাও সাপ কিংবা বিপন্ন প্রাণির সন্ধান পেলে ছুটে যান সেখানে। তার সংগঠন এখন পর্যন্ত ৩ শতাধিক সাপ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছে। সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য, দেশে সর্পদংশনে মৃত্যু হার শূন্যে নামিয়ে আনা এবং মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সহাবস্থান নিশ্চিত করা। তারা বিশ্বাস করেন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী। বাড়িতে সাপ ঢুকলে বা কোনো বন্যপ্রাণী উদ্ধার প্রয়োজন হলে এখন অনেকেই যোগাযোগ করেন। মিম বলেন, সাপ দেখলেই সাধারণত মানুষ ভয় পায়। সাপের কামড়ে প্রতিবছর দেশে শতশত মানুষের মৃত্যু হয়। পৃষ্টপোষকতা পেলে আরো এগিয়ে যাবেন এমন প্রত্যশা কার। সাপ বেশী বিষধর হলে বন বিভাগের জিম্মায় দিয়ে দেন। বন বিভাগ প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বিষধর না হলে তাকে সুস্থ করে প্রকৃতিতেই ছেড়ে দেন। তাদের পথচলায় রয়েছে বেশ কিছু বাধা রয়েছে, যেমন পর্যাপ্ত অর্থের অভাব, উন্নত উদ্ধার সরঞ্জামের ঘাটতি, প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা কম এবং সরকারি সহায়তার অভাব। রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ বর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন রাকিব আল ইসলাম মিম যে কাজটি করছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত