সরকারী ভাবে রোপনের দাবী
কাউনিয়ায় মাল্টিভিটামিন বৃক্ষ সজিনা চাষ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১৮:০২ | আপডেট : ২১ মে ২০২৫, ২০:১৭

কাউনিয়ায় কৃষি বিভাগের তেমন কোন উদ্যোগ না থাকলেও রংপুর অঞ্চলের মানুষের প্রিয় সবজি সজনা (সজিনা) এখন প্রায় বাড়ির উঠানে, রাস্তার ধারে চাষ হচ্ছে। একটা সময় সজিনার তেমন কদর না থাকলেও বর্তমানে শোসাল মিডিয়ায় এর উপকারীতা প্রচারের ফলে ব্যাপক হারে এর কদর ও জনপ্রিয়তা বেড়েছে। রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের রাজেন্দ্র বাজার থেকে তিস্তা সড়ক সেতু পর্যন্ত প্রায় ৫০টি সজিনা গাছ গুলোর পরিচর্যা ও সংরক্ষনের দাবী এলাকবাসীর।
সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে বয়স্ক মানুষের সাথে কথা বলে জানাগেছে আগে হাটে বাজারে সজিনা তেমন বিক্রয় হত না। তাই এ সবজি চাষে কেউ তেমন উৎসাহী ছিল না। সাইখ সিরাজ সজিনা পাতা ও সজিনার উকারিতা নিয়ে অনুষ্ঠান করার পর থেকে মানুষের মাঝে ব্যাপক সারা ফেলেছে। তাই বর্তমানে হাট বাজারে সজিনার ব্যাপক চাহিদা ও কদর থাকায় অনেক কৃষক বানিজ্যিক ভাবে সজিনা চাষে উৎসাহী হয়ে উঠছে। সবজি ব্যবসায়ী খলিল জানান বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ৭০-১০০ টাকা দরে সজিনা বিক্রয় হচ্ছে। কাউনিয়ার গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে সজিনার সাথে মসুর ডালের তরকারী খুবই জনপ্রিয়। কেউ কেউ আলু ও মাছের সাথে সজিনার ঝোল খেতে পছন্দ করায় এখন প্রায় বাড়ীতে এর চাষ বেড়েছে। সজিনা একটি অতি পরিচিত দামি এবং সুস্বাদু সবজি। সজিনার উৎপত্তিস্থল পাক-ভারত উপমহাদেশ হলেও এ গাছ শীত প্রধান দেশ ব্যতীত সারা পৃথিবীতেই জন্মে। বারোমাসি সজিনার জাত প্রায় সারা বছরই বার বার ফলন দেয়। আমাদের দেশে ২-৩ প্রকার সজিনা পাওয়া যায়। বসতবাড়ির জন্য সজিনা একটি আদর্শ সবজি গাছ। নাজিরদহ গ্রামের সজিনা চাষি লালমিয়া জানান, সজিনা গাছ লাগাতে কোন কারুকাজ নেই। শুধু ডাল কেটে লাগালেই গাছ হয় এবং প্রতি গাছ প্রকার ভেদে ৪-৫ মন পর্যন্ত সজিনা হয়। একই গ্রামের বক্কর মিয়া জানান এবার তার ৩টি গাছ থেকে ৯মন সজিনা পেয়েছে। নিজের খেয়ে আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার পরও ২০ হাজার টাকা বিক্রয় করেছেন। নিজপাড়া গ্রামের আরশাদ আলী জানান, রংপুর কুড়িগ্রাম মহাসড়কের সজিনা গাছ গুলো পরিচর্যা ও সংরক্ষ করা গেলে প্রচার সজিনা পাওয়া সম্ভব। কাউনিয়া কৃষি বিভাগ থেকে এই গাছ রোপনে কোন পদক্ষেপ নেই। বিজ্ঞানীরা পুষ্টির দিক দিয়ে সজিনাকে ‘পুষ্টির ডিনামাইট’ আখ্যায়িত করে বলেন এ গাছটি থেকে পুষ্টি, ঔষধিগুণ ও সারা বছর ফলন পাওয়া যায় বিধায় বাড়ির আঙ্গিনায় এটি একটি মাল্টিভিটামিন বৃক্ষ। বিজ্ঞানীরা মনে করেন সজিনার পাতা পুষ্টিগুণের আঁধার। নিরামিষ ভোগীরা সজিনা পাতা থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতে পারেন। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে সজিনা গাছ ৩০০ রকমের রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। আধুনিক বিজ্ঞানও এ ধারণাকে সমর্থন করে। মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত সজিনা বাজারে প্রচুর পাওয়া যায়। এ সময় খরিপ সবজির মধ্যে সজিনার যথেষ্ট কদর থাকে। আগাম সজিনা বাজারে নিতে পারলে আর্থিকভাবে প্রচুর লাভবান হওয়া যায়। কৃষি বিভাগ সঠিক ভাবে প্রচারনা চালালে সজিনা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠতো এবং এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা সম্ভব। কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া আকতার জানান, সজিনা চাষে কৃষদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত