কাউনিয়ায় চরাঞ্চলের মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি ঃ

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১৫:১১ |  আপডেট  : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৩৬

কাউনিয়ায় মন্ত্রী, এমপি, চেয়ারম্যান এমনকি প্রশাসক নিরব দর্শক। রংপুর বিভাগের হতদরিদ্রতম একটি উপজেলার নাম কাউনিয়া। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এই উপজেলায় চরা লের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে দৃশ্যত তেমন কোন কাজ হয়নি। চরা লের হত দরিদ্র মানুষ গুলো মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। স্থানীয় এমপি টিপু মুন্শি বানিজ্যমন্ত্রী হলেও চরের তেমন কোন উন্নয়নে দৃশ্যত চেখে পরে না। সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন চরা ল ঘুরে দেখা গেছে দেশের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার গুলোর মধ্যে বিশেষ করে যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিনোদনের চরম অভাব চর গুলোতে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যাবস্থা, নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন এর অভাবে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সচেতনতার অভাবে শিশুরা শিক্ষা থেকে বি ত হয়ে বাল্য বিবাহ ও যৌতুকের বলি এবং শিশু শ্রমের শিকার হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা না থাকায় পুষ্টি হীনতায় ভূগে মেধা শূন্য প্রজন্ম তৈরী হচ্ছে। বাল্য বিবাহের ফলে পুষ্টিহীন মা যে শিশুর জন্ম দিচ্ছে তারা হচ্ছে বিকলাঙ্গ। শিশুদের মেধার বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়ে ঝড়ে পরার হার বাড়ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় অনেক রোগি কে  ভারে করে আনতে রাস্তায় মৃর্ত্যু বরণ করছে। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পন্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। 

চরে বিনোদনের নামে এক শ্রেনির লোক যাত্রার নামে জুয়া আর অশ্লীল নৃত্য দেখিয়ে যুব সমাজ কে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কিছু কিছু চর মাদক ব্যবসার নিরাপদ রুটে পরিনত হয়েছে। উপজেলার চর নাজিরদহ, পল্লীমারী, প্রাননাথ, গুপিডাংগা, গদাই, ঢুসমারা, তালুকশাহবাজ, গনাই বিশ্বনাথ, হয়বতখাঁ চর গুলোতে সচেতনতা ও জনপ্রতিনিধিদের স্বদিচ্ছার অভাব এবং সরকারী ভাবে নজরদারি না থাকায় তাদের ভাগ্যের কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অবহেলা ও অবিভাবকদের সচেতনাতার কারনে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে  ছাত্র ঝড়ে পড়ার হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। করোনা কালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চরা লে স্বাস্থ কর্মী নিয়োগ করা থাকলেও তারা মাঠে সঠিক সময় কাজ করেন না। বিশেষ করে পরিবার পরিকল্পনা স্বাস্থ্য কর্মীরা সঠিক ভাবে কাজ না করায় জনসংখ্যার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাংকের ঋণ প্রাপ্তিতে দীর্ঘ সূত্রিতার কারনে চর গুলোতে কালীর টাকা (দাদন) ব্যবসা রমরমা।

 এই উপজেলায় বেশ কিছু এনজিও চর গুলোতে কাজ করছে কিন্তু আশানুরুপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। চর গুলোতে নারীর ক্ষমতায়ন নেই বললেই চলে। নারী শ্রমিকের শ্রমের মূল্য পুরুষ শ্রমিকের অর্ধেক। চরের মানুষের উন্নয়নের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা তারিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান সরকারের উন্নয়নের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চর গুলোতে করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার চরের উন্নয়নে অনেক ভাল ভাল কাজ করছে। এলাকার মানুষ জানায় চরের মানুষ গুলো নির্বাচন ছাড়া জনপ্রতিনিধিদের দেখা পায় না। বর্তমান বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি এর কাছে তাদের দাবী তিনি যেন তাদের একটু দেখত আসেন এবং চরের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেন। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত