করোনার উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেই বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৪ এপ্রিল ২০২১, ১১:২১ |  আপডেট  : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:০৫

করোনার উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেই আজ রোববার তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে ভোটের সময়সীমা দুই ঘণ্টা বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। আজ সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। চলবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।

দীর্ঘ আট বছর পর বিজিএমইএর নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট হচ্ছে। এতে সংগঠনের ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৩৫টি পরিচালক পদের জন্য লড়ছেন নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের ৭০ জন প্রার্থী। স্বাধীনতা পরিষদ নামের আরেকটি জোট অবশ্য সম্মিলিত পরিষদের সঙ্গে যৌথভাবে নির্বাচনে আছে।

রাজধানীর র‌্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন হোটেল ও চট্টগ্রামে বিজিএমইএর আঞ্চলিক কার্যালয়ে টানা ১০ ঘণ্টা ভোট গ্রহণ চলবে। এবার মোট ভোটার হয়েছেন ২ হাজার ৩১৩ জন তৈরি পোশাকশিল্প মালিক। তাঁদের মধ্যে ঢাকার ১ হাজার ৮৫২ ও চট্টগ্রামের ৪৬১ জন।

বিজিএমইএর নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফরহাত আনোয়ার গতকাল বিকেলে বলেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে ভোট গ্রহণের জন্য সময় ২ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের নেতা-সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে ভিড় না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ভোট গ্রহণ শেষে আজ রাতেই অনানুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করবে নির্বাচন বোর্ড। আর নির্বাচিত ৩৫ পরিচালক নিজেদের মধ্য থেকে ১৬ এপ্রিল নতুন একজন সভাপতি ও সাতজন সহসভাপতি নির্বাচিত করবেন। নতুন কমিটি ২০ এপ্রিল দুই বছরের জন্য দায়িত্ব নেবে।

বিজিএমইএর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু থেকেই শোরগোল হচ্ছে। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে উভয় প্যানেলের প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে কাদা-ছোড়াছুড়ি শুরু করেন। ভোট গ্রহণের স্থান নিয়ে আপত্তি জানায় সম্মিলিত পরিষদ। একপর্যায়ে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেন। উভয় জোটের নেতাদের অনুরোধে পরদিনই অবশ্য দায়িত্বে ফেরেন তিনি।

সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম ভোট গ্রহণ উপলক্ষে র‌্যাডিসন হোটেলের কমপক্ষে ১০০ কক্ষ গতকাল শনিবার ও আজ রোববারের জন্য বুকিং করে রেখেছে। তবে এসব কক্ষে বাইরের মানুষ অবস্থান নিলে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন উভয় জোটের একাধিক প্রার্থী।

ফোরামের দলনেতা এ বি এম সামছুদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোট গ্রহণের সুন্দর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফলে অধিকাংশ সদস্য ভোট দিতে আসবেন বলে আশা করছি। তবে তিনি অভিযোগ করেন, ‘ভোট গণনার সময় বিরোধী জোটের সমর্থকেরা বিশৃঙ্খলা করতে পারেন, এমন তথ্য আছে। তবে আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

অন্যদিকে ভোটে ঝামেলা হওয়ার শঙ্কা নেই বলে দাবি করেন সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা ফারুক হাসান। ফোরামের দলনেতার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বোর্ড গঠন থেকে শুরু করে ভোটের স্থান নির্বাচনসহ সবকিছুই ফোরামের নেতৃত্বাধীন বিজিএমইএর পর্ষদ নিজেদের ইচ্ছেমতো করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যোগ্য ও অভিজ্ঞ প্রার্থী দিয়েছি। আশা করি, ভোটাররা সেটি বিবেচনা করে আমাদের ভোট দেবেন।’

সর্বশেষ ২০১৩ সালে সাধারণ সদস্যদের ভোটে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত হয়েছিল। এরপর নেতৃত্ব নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম দুই মেয়াদের জন্য সমঝোতা করে। সেই সমঝোতার প্রথম দফায় অর্থাৎ ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সম্মিলিত পরিষদ থেকে সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটি হয়। সেই কমিটি নানা অজুহাত দেখিয়ে ৪৩ মাস দায়িত্ব পালন করে। পরের মেয়াদেও সমঝোতার কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয় দুই জোট। তবে বাগড়া দেয় স্বাধীনতা পরিষদ। নির্বাচনে তাদের নিবৃত্ত করতে নানামুখী চেষ্টাও হয়। শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা পরিষদ খণ্ডিত প্যানেলে প্রার্থী দেয়। সে কারণে ঢাকায় নিয়ম রক্ষার ভোট হয়।

এবারে প্রার্থী যাঁরা
ঢাকার ২৭ পরিচালক পদের জন্য সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থীরা হলেন ফারুক হাসান, শহিদুল হক, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, মো. শহীদউল্লাহ আজিম, নীরা হোসনে আরা, মহিউদ্দিন রুবেল, জাহাঙ্গীর আলম, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, শেহরীন সালাম, তানভীর আহমেদ, ইন্তেখাবুল হামিদ, কফিল উদ্দিন আহমেদ, ইমরানুর রহমান, আশিকুর রহমান, মিরান আলী, খসরু চৌধুরী, মশিউল আজম, নাছির উদ্দিন, এস এম মান্নান, শোভন ইসলাম, মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, হারুন অর রশীদ, আরশাদ জামাল, আসিফ আশরাফ, সাজ্জাদুর রহমান মৃধা ও রাজীভ চৌধুরী।

ঢাকায় ফোরামের প্রার্থীরা হলেন এ বি এম সামছুদ্দিন, রুবানা হক, মাহমুদ হাসান খান, নাভিদুল হক, খান মনিরুল আলম, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, শিহাবুদৌজা চৌধুরী, এনামুল হক খান, ভিদিয়া অমৃত খান, কামাল উদ্দিন, মাশিদ রুম্মান আব্দুল্লাহ, এম এ রহিম, শাহ রাঈদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, এ এম মাহমুদুর রহমান, নাফিস উদ দৌলা, আসিফ ইব্রাহিম, মজুমদার আরিফুর রহমান, তাহসিন উদ্দিন খান, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, ইকবাল হামিদ কোরাইশী, রেজওয়ান সেলিম, ফয়সাল সামাদ, রানা লায়লা হাফিজ, মেজবাহ উদ্দিন আলী ও নজরুল ইসলাম।

অন্যদিকে চট্টগ্রামে নয়টি পরিচালক পদের জন্য সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থীরা হলেন এ এম শফিউল করিম, এম আহসানুল হক, মো. হাসান, রকিবুল আলম চৌধুরী, তানভীর হাবিব, মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা, অঞ্জন শেখর দাশ, আবসার হোসেন ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম। সেখানে ফোরামের প্রার্থীরা হলেন মোহাম্মদ আতিক, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, এনামুল আজিজ চৌধুরী, শরীফ উল্লাহ, মির্জা মো. আকবর আলী চৌধুরী, মোহাম্মদ দিদারুল আলম, রিয়াজ ওয়ায়েজ ও খন্দকার বেলায়েত হোসেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত