উত্তরা শিন শিন জাপান হাসপাতালে কর্মচারীদের মধ্যযুগীয় নির্যাতন: হাসপাতাল থেকে লাশ হয়ে ফিরল সবুজ

  সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২১, ১৯:১২ |  আপডেট  : ১৮ মে ২০২৪, ০৬:১৪

রাজধানীর উত্তরা শিন শিন জাপান হাসপাতালে কর্মচারীদের মধ্যযুগীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে করোনা রোগী সবুজ পিরিচ(৩২) পরবর্তিতে ৩ দিন  ঢাকা গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত সোমবার রাতে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের শুলপুর গ্রামের মৃত সেন্টেু পিরিচের ছেলে সবুজ পিরিচের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে উত্তরা হাসপাতাল থেকে লাশ হয়ে ফিরল সবুজ পিরিচ। উত্তরা থানাার মামলার এজাহার অনুযায়ী আইসিইউতে চিকিৎসাধীন সবুজ পিরিস  ওই রাত দেড়টায় ধারালো ছুরি নিয়ে চিকিৎসাকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। তার এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে মিতু রেগো এবং ইমনা আফরোজ নামের দুই নার্স এবং সাগর নামের এক ওয়ার্ডবয় গুরুতর আহত হন। সবুজ পিরিসের স্ত্রী লাবণী সাংবাদিকদেরকে বলেন, ১৮ জুলাই তার স্বামীর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এ জন্য তারা হাসপাতালে যান। দ্রুততম সময়ে রোগীকে আইসিইউতে নিতে হবে বলে জানানো হয়। এক পর্যায়ে চিকিৎসক জানান, রোগীকে বাঁচাতে হলে ৮০ হাজার টাকা দামের একটি ইঞ্জেকশনও দিতে। আইসিইউতে ভর্তি অবস্থায় ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরপরই রোগী বিকারগ্রস্থ আচরণ শুরু করে। এক জন আইসিইউর রোগী কিভাবে তিনজনকে ধারালো অস্রদিয়ে আহত করতে পারে ?

উত্তরা শিন শিন জাপান হাসপাতালে কর্মচারীদের নির্যাতনে মানুষের সামনে হাত-পা বেঁধে হা পা ভেঙ্গে গুরুতর আহত করা হয়েছিল আমার স্বামীকে।  আজ শুক্রবার হাসপাতাল থেকে দুপুরে সবুজ পিরিচের লাশ সিরাজদিখান শুলপুরের বাড়িতে আনা হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরিবারের একমাত্র ছেলে সদস্যকে হারিয়ে দিশেহারা এখন পরিবারটি।  আইসিইউতে ভর্তি করোনা রোগী সবুজ পিরিচকে নির্যাতনের পর  কয়েক ঘন্টা রাজধানীর উত্তরা শিন শিন জাপান হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্ত্রী লাবনী। শুলপুর গ্রামের শুলপুর খ্রিষ্ঠান কো-অপারেটিভ সমিতির সভাপতি সজল পিরিচ জানান, সবুজ পিরিচকে হাত-পা বেঁধে ভেঙ্গে মধ্যযুগীয় কায়দায় নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয় যার ফলে সবুজের অকাল মৃত্যু হল। আমরা এ বিষয়ে স্বরাস্ট্র মন্ত্রির হস্থক্ষেপ কামনা করছি।

 নিহত সবুজের মা সুমতি পিরিচ বলেন,পাষন্ডরা মধ্যযুগীয় নির্যাতনে মত আমার সবুজকে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়, আমার সবুজকে ওরা চুল ছিড়ে,পিটিয়ে,,ছ্যাকাদিয়ে নির্মম ভাবে মেরে ফেলেছে। আমার সবুজ করোনার থেকে বাচতে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। আমার বুকের মানিককে মেরে ওরা ফেলেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই। সবুজ পিরিচের শ^শুর জ্যোতি কস্তা সাংবাদিকদেরকে বলেন, গত ১৮ জুলাই তার এক মাত্র মেয়ের জামাই সবুজ পিরিচের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এ জন্য তারা রাত তিনটায় ঢাকা উত্তরা শিনশিন হাসপাতালে যান। দ্রুততম সময়ে রোগীকে আইসিইউতে নিতে হবে বলে জানানো হয়। এক পর্যায়ে চিকিৎসক জানান, রোগীকে বাঁচাতে হলে  এখখুনি ৮০ হাজার ৮শত টাকা দামের একটি ইঞ্জেকশনও দিতে। 

আইসিইউতে ভর্তি অবস্থায় ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরপরই রোগী বিরুপ আচরণ শুরু করে। এ ছাড়া প্রতিদিনের জন্য ওষুধের খরচ বাবদ ৩৫ হাজার টাকার বিল দেওয়া হয়। শুরু থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপ¶ বিভিন্ন পরীক্ষা চিকিৎসার নামে সকালে বিকালে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয় । করোনা রোগী বলে রোগীর সাথে দেখা করতে দিতেন না। তিনি আরোও বলেন,উত্তরা শিশিন হাসপাতালে কর্মচারীদের অমানুসিক নির্যাতনে আমার একমাত্র মেয়ের জামাই মারা গেছেন আমি এর সুষুঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত