ঈদে বেশি ভাড়া নিলে সেই বাস বন্ধের হুঁশিয়ারি মালিক সমিতির

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪, ১৫:৪৩ |  আপডেট  : ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২২

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, এবারের ঈদযাত্রায় আন্তঃজেলা বা দূরপাল্লার যদি কোনো গণপরিবহন বাড়তি ভাড়া নেয়, সেটির প্রমাণ যদি আমরা পাই, তবে সেই গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া, নেওয়া হবে আইনানুগ পদক্ষেপ।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে মহাসড়ক/সড়ক পথে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন, নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।

সভায় মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, এবারের ঈদে সম্ভাব্য কোন কোন এলাকায় জট, যানজট বা ব্লক তৈরি হতে পারে, সেটি চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা এবার ঈদযাত্রায় হাইওয়েতে ড্রোনের সহায়তা নিচ্ছি। ড্রোনের সহায়তায় চিত্র দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারব। হাইওয়ের অনেক রাস্তা চার লেন হচ্ছে। কোথাও কোথাও হয়ে গেছে। এখন রাস্তায় যদি কোনো যানবাহন তাৎক্ষণিক অকেজো হয়ে পড়ে, তাহলে সেটি সরানো সহজ হবে। ক্রুটিপূর্ণ কোনো যানবাহন যাতে ঈদে সড়কে না নামে, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই ভালোভাবে ঈদযাত্রায় যেতে চাই। ভালোভাবে যাওয়ার সুযোগটা আমাদের তৈরি করতে হবে। ঈদে আমরা সবাই একসঙ্গে যেতে চাই। সেটি না করে আমরা ভাগ ভাগ করে, আগে বা পরেও যেতে পার। তাহলে ৫/৭ বা ৮ ঘণ্টার মধ্যেই গন্তব্যে যেতে পারব। 

তিনি বলেন, ঈদের দুদিন আগেই যেতে হবে ব্যাপারটা সেই রকম নয়। জনসংখ্যার তুলনায় আমাদের গণপরিবহন অনেক কম। হজের সময় সৌদিতে সরকার বাস হায়ার করে। আর আমাদের ঈদে এখানে সেই ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই আপনি আরও আগে বা ঈদের পরও যেতে পারেন। আমরা আশ্বস্ত করছি যে, ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে। 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, আমরা লক্ষ্য করি... কিছু লক্কড়-ঝক্কড় বাস যেগুলো সারা বছর সিরিয়াল পায় না, এগুলো ঈদের সময় রাস্তায় নেমে পড়ে। এসব আমরাও ধরতে পারি না, পুলিশও বুঝতে পারে না কোত্থেকে এগুলো রাস্তায় আসে। এগুলো রিজার্ভ হিসেবে চলে... গার্মেন্টস শ্রমিকরা নিয়ে যায়। যে রাস্তায় আমাদের ছোট বাসও চলে না, সেখানে দেখি বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাস ঢুকে পড়েছে। আমরা এখনো মহাসড়ক থেকে নছিমন, করিমন ও ভটভটি সরাতে পারিনি। এটাও আমাদের একটি বাধা। 

প্রতি বছরই বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ ওঠে এবং প্রমাণও মেলে, কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না। এ বিষয়ে বিভিন্ন স্টেক হোল্ডার ও সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়েন রাঙ্গা। পরে তিনি বলেন, অনেক পরিবহনই ঈদের সময় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। যেসব বাস কোম্পানি সুনামের সঙ্গে কাজ করছে, তাদের কোনো বাস যদি ভাড়া বেশি নেয়, তাহলে আমাদের জানাবেন, আমাকে জানাবেন... ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে স্পটে উপস্থিত হব। অভিযোগ পেলেই আমরা সেখানে যাব। কোন কোন জায়গায় কারা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে, সেটি আমরা শনাক্ত করব। আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেলে সেই গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেব। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। 

মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে সড়কের তিনটি লেনই অবৈধ পার্কিংয়ের দখলে। যার বড় প্রভাব পড়ে সড়কে যান চলাচলে। সেটি সমাধান না হলে ঈদযাত্রার বড় অংশ সময় যাবে ঢাকাতেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, রাস্তা লক বা ব্লক করে রাস্তায় দাঁড়ানোর কোনো অধিকার আমাদের নেই। যারা অবৈধভাবে পার্কিং করবে সড়কে, আর যানচলাচল বিঘ্নিত করবে, তাদের বিরুদ্ধে ট্র্যাফিক পুলিশ আইনানুগ পদক্ষেপ নিক, আমাদের কোনো সমস্যা নেই। 

হাইওয়ে পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খানের সভাপতিত্বে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় বিজিএমইএ; বিকেএমইএ; চেয়ারম্যান/জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন; মহাসচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি; সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন; সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন; সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি; চেয়ারম্যান/জেনারেল সেক্রেটারি, ঢাকা বাস-ট্রাক ওনার্স গ্রুপ; সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক/সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি; সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, বাস মালিক সমিতিসহ হাইওয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন। 

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত