ইসিতে স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারবর্গের কাউকে না রাখার প্রস্তাব
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ২০:৪৫ | আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০
একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে চলমান সংলাপের চতুর্থ দিনে নির্বাচন কমিশনে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী বা তার পরিবারবর্গের কাউকে না রাখার প্রস্তাবসহ চার দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (বিটিএফ)।
রাষ্ট্রপতির সাথে আজ বিকাল চারটায় বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে এই দাবি জানান বিটিএফ এর চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী নেতৃত্বাধীন সংগঠনটি।
সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন বাসসকে জানান, সংলাপে তরিকত ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ স্বাধীন, কার্যকরী অগ্রহণযোগ্য ইসি গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে চার দফা দাবি পেশ করেন।
বিটিএফের নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ সংবিধানের ১১৮ (১) এ নির্বাচন কমিশন আইনের কথা উল্লেখ থাকলেও বিগত কোন সরকারই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। বর্তমান পেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন করা দরকার।
পিটিএফ চেয়ারম্যান অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠনের ব্যাপারেও মত দেন। তবে বিষয়টি সর্বজন গ্রহণযোগ্য ও বিতরকের ঊর্ধ্বে থাকার জন্য রাজনৈতিক দল ছাড়াও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় বা সংলাপের আহ্বান জানান।
মাইজভান্ডারী বলেন, প্রস্তাবিত অনুসন্ধান কমিটিতে গণমাধ্যমের একজন প্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদেরকে অন্তর্ভুক্ত করার ও প্রস্তাব দেন। নির্বাচন কমিশনে যাতে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী বা তাদের পরিবারবর্গের কাউকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া না হয় সে দাবি জানান বিটিএস।
প্রেস সচিব জানান, বিটিএফ প্রতিনিধিদলকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, একটি নির্বাচন কমিশন গঠন একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনই সংলাপের আলোচনার মূল লক্ষ্য।
রাষ্ট্রপতি হামিদ আশা প্রকাশ করেন পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার ভিত্তিতে একটি দক্ষ, শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব হবে। তিনি দেশের ইসি গঠনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সার্বিক সহযোগিতাও কামনা করেন।
গত ২০ ডিসেম্বর প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাথে সংলাপে বসে রাষ্ট্রপতি হামিদ। এ পর্যন্ত মোট পাঁচটি রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল চারটায় বৈঠক হবে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাথে, ২৯ ডিসেম্বর বুধবার বিকেল চারটায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ সাথে এবং ইসলামী ঐক্যজোট সাথে আলোচনা হবে ২৯ ডিসেম্বর রোজ বুধবার সন্ধ্যা ৬ টায়, ২ জানুয়ারি বৈঠক হবে গণফোরামের সাথে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং বিকল্প ধারা বাংলাদেশ এর সাথে সন্ধ্যা সাতটায়, আগামী ৩ জানুয়ারি সংলাপ হবে গণতন্ত্রী পার্টির সাথে সন্ধ্যা ৭ টায় এবং বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাথে সন্ধ্যা সাতটায়। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। সংলাপের সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি 'সার্চ কমিটি'র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।
বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত