আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৪১ | আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৬
পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় আগের তুলনায় ব্যাপক হারে বেড়েছে আলু চাষ। এ এলাকার মাটি আলু চাষের উপযোগী হওয়ায় কৃষকরা এই আবাদে বেশি ঝুঁকছেন। এবার এই উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন সহ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ৪২ হাজার মেট্রিক টণ আলু উৎপাদন সম্ভব হবে বলে ধারণা করছে কৃষি অফিস। আর গত বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, এই অ লের কৃষকেরা সাধারণত-পাকড়ি, ফাঁটা পাকড়ি, লাল পাকড়ি, ভূটান, ডায়মন্ড, কার্ডিনাশ, দেশি হ্যাগরায়, ললিতা, গ্যানোলা এবং দেশি আলুর চাষ করেছেন। উপজেলার কোমারপুর গ্রামের আলু চাষি ফজলুল হক,বকুল হোসেন,নূর ইসলাম জানান, ‘আলু লাগানোর দেড় মাস অতিক্রম করছে। মূলত অগ্রহায়ণ মাস আলুর বীজ লাগানোর উত্তম সময়। তবে আগাম আলু চাষ শুর করতে হয় কার্তিক মাসের শেষ ভাগে। এক বিঘা জমিতে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। দেশি আলুর বিঘাপ্রতি ফলন ৬০ থেকে ৭০ মণ। তবে অন্য জাতের আলু হলে বিঘাপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। পুরো সময়ে চার থেকে পাঁচ বার সেচ দিতে হয়। প্রতি সেচে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১০০০ টাকা। আর মাঝে মধ্যে আলুর পাতা যেন পচন না ধরে সেই জন্য কীটনাশক স্প্রে করতে হয়।’
কেশরতা গ্রামের আলুচাষি চঞ্চল হোসেন জানান, একবিঘা জমিতে শ্রমিক নিতে হয় ৫ বার। শ্রমিকের মজুরি ৫০০ টাকা দিন। দেশি আলু বাড়িতে খাওয়ার জন্য রাখা হয়। ওই মাঠে ১১০ দিন পর্যন্ত রাখতে হয়। না হলে আলু পুষ্ট হয়না। মান খারাপ হয়। দ্রুত আলুতে পচন ধরে। ক্ষেতে এখন পরিচর্যা চলছে। আলু উঠানোর পর পাইকাররা জমি থেকেই সেগুলি নিয়ে যায়।
উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কোমারভোগ গ্রামের কৃষক হাফিজার রহমান জানান, ‘আমরা আলু দ্রুত বিক্রির জন্য ভূটান আলু চাষ করি। তিনি চলতি মৌসুমে বেশি লাভের আশায় পাঁচ বিঘা জমিতে ভূটান আলুর চাষ করেছেন। এতে বিঘা প্রতি তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার টাকা। ফলন ৭০-৯০ মণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’উপজেলার কয়েকটি হাট ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলুর দাম কেজিপ্রতি ১২ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। পুরাতন আলুর দাম ১০ থেকে ১২ টাকা। গত বছর আলুর দাম না বাড়লেও অনেক কৃষকই লাভবান হয়েছে। শেষের দিকে অবশ্য আলুর দাম কিছুটা বেড়েছিল। অনেক আলুচাষিরা আগাম আমন ধান ঘরে তোলার পর আলুর আবাদ শুরু করেন। এতে একই জমিতে তিনবার ফসল পাওয়া যায়। সবমিলে কুষকদের মুখে হাসির ঝিলিক লক্ষ করা যাচ্ছে।
আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, এই উপজেলাটি আলু চাষে বেশ সমৃদ্ধ। আলুর বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। কিছু এলাকায় আগাম জাতের আলু আবাদ হয়েছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আলু লাগানোর প্রথম থেকেই কৃষকদের যাবতীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এবছর আবহাওয়া আলু চাষের অনুকূলেই রয়েছে। এবার আলুর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি আলুর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশাবাদ প্রকাশ করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত