আবারও 'রেপো সুদহার' বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৫৯ | আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৬
মুদ্রানীতি সুষ্ঠুভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে আবারও রেপো বা নীতি সুদহার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে হলে আগের চেয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি সুদ গুণতে হবে। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মনিটারি পলিসি কমিটির (এমপিসি) ৫৬তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ওভারনাইট রেপো সুদহার আগের চেয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৫.৭৫ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এতে রেপো তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নেওয়া ধারের বিপরীতে ৫.৭৫ শতাংশ সুদ দিতে হবে। রেপোর মাধ্যমে সাধারণত একদিনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করা বা জমা রাখা হয়। তবে রিভার্স রেপো সুদহার বিদ্যমান বার্ষিক শতকরা ৪ ভাগে অপরিবর্তিত থাকবে। এ নির্দেশনা আগামী ২ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, করোনার প্রভাব কাটিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শক্তিশালী হলেও চলমান রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সাপ্লাই চেইনে সৃষ্ট সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্ব চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা এখনও রয়েছে। ফলে ২০২১ সালের শুরু থেকে বিশ্ববাজারে অধিকাংশ পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে যা এখনও পূর্ব অবস্থায় ফিরে আসেনি। বিশ্ব বাজারে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার প্রেক্ষাপটে প্রত্যাশিত মূল্যস্ফীতিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিধায় তা নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে রেপো সুদহার আগের চেয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ জুন মনিটারি পলিসি কমিটির (এমপিসি) ৫৫তম সভায় রেপোর সুদহার আগের চেয়ে দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৫.৫০ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছিল।
ওই সময় বলা হয়েছিল, চলমান করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা কার্যকর হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের তীব্রতা হ্রাস এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন দেশের সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব ও মুদ্রানীতি গ্রহণের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন, চলমান রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের পণ্য (খাদ্য ও খাদ্য-বহির্ভূত) মূল্যের ঊর্ধ্বগতি পরিস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির ও বৈশ্বিক অর্থনীতির মুখ্য সূচকসমূহের পর্যালোচনার জন্য দেশের মুদ্রানীতি সুষ্ঠুভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত মনিটারি পলিসি কমিটি রেপো সুদহার পুনঃনির্ধারণ করেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব বলছে, জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশে দাঁড়ায়। জুনে এ হার ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত