আদমদীঘি বাসী  শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ, দেখার কেউ নেই

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ: ৫ অক্টোবর ২০২১, ১৯:৩৯ |  আপডেট  : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩০

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় শব্দদূষণে জনজীবন অতিষ্ট। যানবাহনের উচ্চ হর্ন, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারনে উচ্চ শব্দে মাইকিং, কারখানার শব্দ, আবাসিক এলাকায় ইট ভাঙার মেশিন চালানোসহ বিভিন্ন কারণে আদমদীঘিতে শব্দদূষণের মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব ও পৌর আইনের প্রয়োগ না থাকায় শব্দদূষণে নাকাল হয়ে পড়েছে  উপজেলাবাসী।

আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোমেনুল ইসলাম বলেন, ৩০ থেকে ৩৫ ডেসিবল শব্দমাত্রায় বিচলিত হওয়া ও ঘুমের ব্যাঘাত, ৬৫ ডেসিবলের ওপর শব্দমাত্রায় শ্রবনশক্তি হ্রাস এবং ১২০ ডেসিবলের ওপর শব্দমাত্রায় স্থায়ীভাবে শ্রবণশক্তি লোপ পেতে পারে। শব্দদূষণের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিশুরা। তিন বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের জন্য শব্দদূষণ শিশুর মানসিক বিকাশের অন্তরায়। আদমদীঘিতে শব্দদূষণের সব মাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের আদমদীঘি উপজেলা সদরের সড়ক এবং সান্তাহার পৌর শহরের সড়কের উভয় পাশে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্টান, বানিজ্যিক কার্যালয় অবস্থিত। এ ছাড়া কয়েকটি ক্লিনিক, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রও  আবাসিক ভবন, এনজিও কার্যলয়, মসজিদ রয়েছে রাস্তার  উভয় পাশে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত বা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নীরব এলাকা ঘোষনা করা হয়। এসব এলাকার চতুর্দিকে ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় কোন প্রকার হর্ন বাজানো যাবে না। আবাসিক এলাকার ৫০০ মিটারের মধ্যে নির্মাণকাজের জন্য ব্যবহত ইট ভাঙার মেশিন ব্যবহার করা যাবে না। কোনো উৎসব, সামাজিক বা রাজনৈতিক বা  অনুষ্ঠানে লাউড স্পিকার, অ্যামপ্লিফায়ার বা শব্দের মাত্রা বর্ধণকারী অন্য কোন যন্ত্র ব্যবহার করতে হলে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে। এসব কার্যক্রমে সর্বোচ্চ পাঁচ ঘন্টা এবং রাত ১০ টার পর কোনোক্রমেই শব্দদূষণকারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যাবে না। 

সান্তাহার বিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহসিন আলী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়টি সড়ক সংলগ্ন। ফলে যানবাহনের এবং উচ্চমাত্রার হর্নের শব্দে পাঠদান ব্যহত হয়। পৌরসভার  আইন অনুযায়ী বেলা দুইটা থেকে সন্ধা ছয়টা পর্যন্ত মাইকিং করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এখানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যের, মাংস বিক্রি সহ নানা কিছুর উচ্চ শব্দে মাইকিং করা হয়। ট্রাক, ট্রাকটরের শব্দে শিশুসহ বড়দের ক্ষতি হচ্ছে। সান্তাহার নাগরিক কমিটির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ  আলহাজ্ব মোসলেম উদ্দীন বলেন, শহরে নিদিষ্ট কোন বাসষ্ট্যান্ড না থাকায় শহরের ওপর দিয়ে যাওয়া মহাসড়কে ইচ্ছেমতো যাত্রী ওঠানো-নামানোর সময় যানবাহনগুলোর উচ্চ হর্নে শব্দদূষন হচ্ছে। এতে শহড়ের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। আমরা এর প্রতিকার চাই। 

বিআরডি চেয়ারম্যান মিজনিুর রহমান বাবু বলেন, কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্টানে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে গানবাজনা করা হয়। হাসপাতাল,শিক্ষাপ্রতিষ্টান, আবাসিক এলাকা সহ যেখানে-সেখানে ইট ভাঙার যন্ত্র দিয়ে দিনরাত বিকট শব্দে ইট ভাঙা হয়। এতে উপজেলাবাসী চরম শব্দদূষণের শিকার হচ্ছে। এসবের কোন মনিটরিং নেই। 

আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায় বলেন, এর আগে বিষয়টি তাঁকে কেউ লিখিত বা মৌখিক ভাবে বলেন নি। এখন থেকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত