আজ যেসব স্থানে টিসিবির ট্রাক থাকবে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:২৯ |  আপডেট  : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫৭

রাজধানীর স্বল্প আয়ের মানুষকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য দিতে আবারও ট্রাকে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ [টিসিবি]। ঢাকার ৩০টি স্থানে ট্রাকে এই পণ্য বিক্রি চলছে। সাধারণ মানুষের সংসার খরচের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্য বিক্রির পুরোনো পদ্ধতিতে ফিরেছে সংস্থাটি।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবির প্রধান কার্যালয়ের সামনে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বলা হয়, ট্রাক থেকে সবাই পণ্য কিনতে পারবেন। প্রতিটি ট্রাক থেকে প্রতিদিন ৩০০ মানুষ পণ্য পাবেন। সে হিসাবে ঢাকায় প্রতিদিন ৯ হাজার ক্রেতা ভর্তুকি মূল্যে চারটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবেন।

আজ যেসব স্থানে টিসিবির ট্রাক থাকবে, সেগুলো হলো খিলগাঁও রেলগেট, মুগদা মেডিকেল কলেজসংলগ্ন এলাকা, মালিবাগ রেলগেট, শনির আখড়া বাসস্ট্যান্ড, আজমপুর কাঁচাবাজার [উত্তরা], মতিঝিল বক চত্বর, ফকিরাপুল বাজার, আবদুল্লাহপুর মোড়, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ [ধানমন্ডি], আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ, ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকা, সচিবালয়ের ৩ নম্বর গেটের সামনে, সূত্রাপুর থানার পাশে, কারওয়ান বাজার টিসিবি ভবনের সামনে, মহাখালী কাঁচাবাজার, কচুক্ষেত বাজার [ক্যান্টনমেন্ট], গাবতলী বাসস্ট্যান্ড, কুড়িল বিশ্বরোড, মিরপুর–১ নম্বর শাহ আলী মাজার, মিরপুর–১০ নম্বর গোল চত্বর, মিরপুর ইসিবি চত্বর, কলেজগেট [হৃদ্‌রোগ হাসপাতাল], মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, ধানমন্ডি জিগাতলা, ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হল, রামপুরা বাজার, শাহজাদপুর বাজার, মিরপুর কালশীর মোড়, বেগুনবাড়ি [দীপিকার মোড়] ও শাহিনবাগ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ–সংলগ্ন এলাকায় ট্রাকে পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি।

তবে প্রতিদিন একই স্থানে টিসিবির ট্রাক না–ও থাকতে পারে বলে জানা গেছে। প্রয়োজন অনুসারে ট্রাকে পণ্য বিক্রয়ের স্থান পরিবর্তন করা হতে পারে।

ট্রাকে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা ভেবে ট্রাকে পণ্য বিক্রির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপাতত ঢাকার মধ্যে এই কার্যক্রম চলবে। বেশি করে পণ্য আমদানি করা গেলে তখন ঢাকার বাইরে বিক্রির চিন্তাভাবনা করা হবে। এ কার্যক্রম দুই মাসের মতো চলতে পারে বলে জানান তিনি।

সেই সঙ্গে পরিবার কার্ডধারী এক কোটি মানুষ প্রতি মাসে একবার করে ভর্তুকি মূল্যে যেসব পণ্য পান, সেই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে টিসিবি।

টিসিবি পণ্য আমদানি করতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে উল্লেখ করে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ আরও বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়, কিন্তু তারা পেঁয়াজ দেওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। ভারত থেকে চিনিও আসে, সেটাও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তারপরও টিসিবি আমদানি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া আমদানি কমিয়ে ও কীভাবে নিজেরা উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া যায়, সে চেষ্টাও অব্যাহত আছে।

জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি বেড়েছে; নিম্ন আয়ের মানুষকে সহায়তা করতে আমরা কাজ করছি। চাহিদা অনুসারে এই সহায়তা আরও বাড়ানো হবে।’

এই কার্যক্রমের মাধ্যমে ঢাকার ১৩ লাখ পরিবার কার্ডধারী মানুষের পাশাপাশি আরও ২ লাখ মানুষ টিসিবির ভর্তুকি মূল্যের পণ্য পাবেন বলে উল্লেখ করেন টিসিবির চেয়ারম্যান আরিফুল হাসান।

টিসিবির ট্রাক থেকে একজন ক্রেতা দুই কেজি করে মসুর ডাল, আলু ও পেঁয়াজ ও দুই লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারবেন। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম রাখা হবে ৫০ টাকা, আলু ৩০ টাকা ও মসুর ডাল ৭০ টাকা; প্রতি লিটার সয়াবিন তেল পাওয়া যাবে ১০০ টাকায়। আজ সব ট্রাকে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।

টিসিবি প্রতিদিন ঢাকার বাজারদরের একটা তালিকা প্রকাশ করে। গতকাল সোমবার সংস্থাটির প্রকাশিত বাজারদর থেকে জানা যায়, ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজের খুচরা মূল্য পড়ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। আলু প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫৫ টাকায়; মানভেদে প্রতি কেজি মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৬৮ টাকায়। খুচরা বাজারে অবশ্য এই দাম কমবেশি হয়ে থাকে।

ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ট্রাকে পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দেয় টিসিবি। পরিবার কার্ডের মাধ্যমে সারা দেশে এক কোটি পরিবারের মধ্যে পণ্য বিক্রি শুরু করে সরকারি এই সংস্থা। কিন্তু প্রায় এক যুগের মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন সবচেয়ে বেশি। এ সময় রাজধানীর সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে ট্রাকে পণ্য বিক্রিতে ফিরেছে সংস্থাটি।

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত