অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাাবিত সুন্দরবন

  স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২২, ১৯:৫২ |  আপডেট  : ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:২৬

ওড়িষ্যা উপকূলের লঘুচাপটি স্থল নিম্নচাপে রূপ নিয়ে ভারতের ছত্তিশগড় এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সেখানে ক্রমেই দুর্বল হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে জানিয়েছেন মোংলা আবহাওয়া অফিস ইনচার্জ অমরেশ চন্দ্র ঢালী। তিনি বলেন, এর প্রভাবে মোংলাসহ উপকূলে ঝড়-বৃষ্টি বাড়বে। তবে সতর্কতা সংকেত বাড়ার সম্ভাবনা নেই। স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় অতিরিক্ত ২-৪ ফুট পানিতে উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

লঘুচাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় বুধবার (১০ আগস্ট) ভোর থেকে মোংলা সমুদ্র বন্দরসহ সাগর ও সুন্দরবন উপকূলজুড়ে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর প্রচÊ উত্তাল রয়েছে। সাগর পাড়ের দুবলার চরে প্রচন্ড ঝড় ও বৃষ্টি হচ্ছে।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুবলার চরের আশপাশের নদী-খালে পাঁচ শতাধিক জেলে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন ও দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীলিপ।

তারা বলেন, সাগর ভয়াবহ উত্তাল হয়ে উঠেছে। এতে দুবলার চর এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় আড়াই থেকে তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের বেশিরভাগ বনের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকেই তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি হওয়ার পরপরই জানমালের রক্ষা নিজ নিজ এলাকার ঘাটে চলে গেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত দুবলা চর সংলগ্ন সাগরে কোনো ট্রলার দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানান তারা।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, মঙ্গলবারের (৯ আগস্ট) তুলনায় বুধবার সুন্দরবনে জোয়ারের পানি বেড়েছে। দুই থেকে আড়াই ফুট পানিতে বনের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। করমজলের বনের ভেতরেও স্বাভাবিকের তুলনায় দুই ফুটেরও বেশি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে বুধবারও মোংলা বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি থাকলেও বন্দরের ফেয়ারওয়েবয়া, হিরণপয়েন্ট, হাড়বাড়ীয়া ও জেটিতে পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহনের কাজ স্বাভাবিক গতিতেই চলছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার।

তিনি বলেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনীয়সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।অন্যদিকে বৃষ্টিপাত ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে চিংড়ি ঘের তলিয়ে ¶য়¶তির আশঙ্কা করছেন ঘের মালিকরা।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় প্রায় ১১ হাজার চিংড়ি ঘের রয়েছে। বিশেষ করে পশুর নদীঘেঁষা চিলা ও বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের ঘেরগুলো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। তারপরও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ঘেরগুলোর চারপাশে নেট দেওয়ার জন্য মালিকদের বলা হয়েছে। তাতে পানি বেশি হলেও মাছগুলো বেরিয়ে যেতে পারবে না।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত