হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতাদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের বৈঠক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:২২ |  আপডেট  : ৫ মে ২০২৪, ০৫:২৫

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডির কার্যালয়ে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দফতর সম্পাদক মিহির রঞ্জন হাওলাদারের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব সরকারি দলের বিগত নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে চলমান আন্দোলনের এক পর্যায়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় আজ।

বৈঠকে ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত দেশব্যাপী বিরাজমান সংখ্যালঘু পরিস্থিতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরে ও আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, ‘এরা আজ সার্বিকভাবে হতাশাগ্রস্ত ও বিপর্যস্ত। নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এদের ওপর অব্যাহত নানামুখী হামলা আরও জোরদার হতে পারে।’ 

বিজ্ঞাপন

সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে দাশগুপ্ত বলেন, ‌‘তা না হলে সংখ্যালঘুরা অধিকতর হতাশ হয়ে পড়তে পারে, যা আগামী নির্বাচনে ভোটদানে তাদের নিরুৎসাহিত করবে।’

ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের জানামতে, দেবোত্তর সম্পত্তি আইনের খসড়া বিল ইতোমধ্যেই প্রস্তুত হয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আর বৈষম্য বিলোপ আইনের খসড়া বিল সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।

দাশগুপ্ত বলেন, ‘পার্বত্য শান্তিচুক্তি, পার্বত্য ভূমি কমিশন অনেকটা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর ফলে পার্বত্য অঞ্চলেও হতাশা বেড়েছে এবং নানামুখী প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অনতিবিলম্বে তা কার্যকরীকরণ ছাড়া বিকল্প কোনও পথ আজ আর খোলা নেই। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন দীর্ঘকাল আগে হলেও ট্রাইব্যুনাল ও আপিল ট্রাইব্যুনালে আবেদন নিষ্পত্তির হার এখনও আশানুরূপ নয়। আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা নিষ্পত্তি হলেও জেলা প্রশাসকরা তা দাবিদারদের আইনের সীমার মধ্যে প্রত্যর্পণ করছেন না, যাতে তারা যথেষ্ট হয়রানির মুখোমুখি হচ্ছে। অনতিবিলম্বে এর সমাধান প্রয়োজন।’

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের
সাধারণ সম্পাদক
অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মনোনীত করায় আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় গোটা জাতি ধন্য হয়েছে।

২০০১-২০০৬ সালের সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের ঘটনাবলির স্বরূপ উন্মোচনের জন্য গঠিত সাহাবুদ্দিন কমিশনের রিপোর্টের সুপারিশের আলোকে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রমাণের জন্য ওবায়দুল কাদেরের প্রতি আহ্বান জানান অ্যাডভোকেট দাশগুপ্ত।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রানা দাশগুপ্তের বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ ঐকমত্য পোষণ করে বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গিকার বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে যথাসময়ে অবহিত করা হবে। তিনি এ মর্মে আশা প্রকাশ করেন যে এসব দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিগত চার বছরে দুটি সংকট অতিক্রম করতে হয়েছে। একটি করোনা সংকট, অন্যটি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, যা সরকারকে এখনও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এ কারণে অন্য বিষয়গুলোর প্রতি আমাদের দৃষ্টি দেওয়া সম্ভব হয়নি।

স্বীকার করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংখ্যালঘু জনজীবনের বিরাজিত সংকটের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ছাড়াও তার দলের কয়েকজন সাংসদ নেতা ও দলের ভেতরকার পরগাছারা সম্পৃক্ত। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, যাতে আগামী নির্বাচনে তারা কোনোভাবেই দলীয় মনোনয়ন না পায়।’

বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্মল চ্যাটার্জি। অপরদিকে ঐক্য পরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, নির্মল রোজারিও, কাজল দেবনাথ, জে এল ভৌমিক, বাসুদেব ধর কান্তি দত্ত, ভদন্ত সুনন্দপ্রিয় ভিক্ষু রঞ্জন কর্মকার, মণীন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত কুমার দেব, অ্যাডভোকেট তাপস পাল ও সন্তোষ শর্মা।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত