হারিছ চৌধুরীর ডিএনএ পরীক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেয়ের আবেদন
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২২, ১১:১২ | আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০৮
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর লাশ কবর থেকে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। পাশাপাশি ডিএনএ পরীক্ষা করতে চায় তদন্ত সংস্থা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগশন ডিপার্টমেন্ট-সিআইডিও।
হারিছের পারিবারিক সূত্র জানায়, পরিচয় সম্পর্কে দ্বিধা দূর করতে ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন হারিছের লন্ডন প্রবাসী মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী। একই ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং সিআইডি প্রধানের কাছে।
প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে সামিরা চৌধুরী বলেন, ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের এভারকেয়ার হাসপাতালে কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা যান হারিছ চৌধুরী। কিন্তু পরিচয় গোপন করার জন্য তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন মাহমুদুর রহমান নামে। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে হারিছ চৌধুরীর নামে যে ডেথ সার্টিফিকেট জারি করা হয়েছিল তাতে তার প্রকৃত নামের পরিবর্তে লেখা ছিল মাহমুদুর রহমান।
মৃত্যুর পর হারিছ চৌধুরীকে সাভারের বিরুলিয়ার কমলাপুর খাতামুন্নাবিয়্যান মাদ্রাসার পাশে দাফন করা হয়। কিন্তু এটি হারিস চৌধুরীর পরিবারের স্বীকৃত কবরস্থান নয়।
সামিরা বলেন, আমার প্রয়াত পিতা হারিছ চৌধুরীর আসল পরিচয়ের বিষয়টি পরিবারের পাশাপাশি বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অতএব, বাংলাদেশের আইন বিভাগ যদি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রয়াত পিতার পরিচয় নিশ্চিত করতে চায় তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই। প্রয়োজনে কবর থেকে বাবার মৃতদেহ তুলেও তারা ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করতে পারেন। আবেদনে প্রয়াত বাবার দেহাবশেষ তাদের দর্পণনগরের গ্রামে নির্দিষ্ট কবরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করার আবেদনও জানান সামিরা।
এ বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, হারিছ চৌধুরী একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি। অনেক আগেই তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি। তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য তৈরি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আমাদের কাছে একটি প্রতিবেদন চেয়েছিল। আমরা ইতোমধ্যে সেই প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। প্রতিবেদনে কী লিখা হয়েছে, তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে আদালতের অনুমতি নিয়ে কবর থেকে লাশ তোলা হতে পারে বলেও তিনি জানান।
এদিকে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে যে রহস্য রয়েছে, তা দূর হওয়ার ওপর নির্ভর করছে, আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলে হারিছের নামে যে রেড নোটিশ ঝুলছে তা সরানো হবে কিনা। তিনি যদি সত্যি সত্যিই মারা গিয়ে থাকেন তাহলে রেড নোটিশ সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, হারিছ চৌধুরী তার নাম-পরিচয় গোপন করে মাহমুদুর রহমান সাজেন বলে সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে আসে। ওই পরিচয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেন তিনি। ইন্টারপোলের রেড নোটিশধারী হারিছ চৌধুরী মৃত্যুর আগে প্রায় ১১ বছর ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। গণমাধ্যমে এমন তথ্য প্রকাশের পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি মাহমুদুর রহমানই হারিছ চৌধুরী কিনা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত