শিমুল ফুলের হাতছানি

স্মৃতিগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

  সুমন্ত রায়

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:০২ |  আপডেট  : ৩ মে ২০২৪, ০৭:৫৭

বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ এবং ভাগ্যকুল পাঠাগার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আয়োজনে গতকাল ২৫ শে সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় বিক্রমপুর গবেষক অধ্যাপক মো. শাহজাহান মিয়া রচিত শিমুল ফুলের হাতছানি স্মৃতিকথা গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব রাঢ়ীখাল স্যার জগদীচন্দ্র বসু ইনস্টিটিউশন ও কলেজ এর অবলা বসু অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ আজিজ, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত দন্তচিকিৎসক ডাঃ আব্দুল মালেক ভূঁইয়া। সম্মানিত অতিথি  হিসেবে বক্তব্য রাখেন খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক ঝর্না রহমান, এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী সোহেল রিয়াজুল, কবি ও সংগঠক মুজিব রহমান, কবি ও সাংবাদিক মো. আরিফ হোসেন, রাঢ়ীখাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজোয়ান হোসেন ঢালী, গভর্নিং বডির সদস্য সাইদুজ্জামান খান প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য কিবরিয়া আহমেদ, ভাগ্যকুল পাঠাগার ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত বাঁধন, পাঠচক্র সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিশু, সদস্য সান্দ্র মোহন্ত ও ইকবাল হুসেন বাবুল৷

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন অধ্যক্ষ জনাব ফরহাদ আজিজ ৷ অনুষ্ঠানে লেখক স্বপরিবারে উপস্থিত ছিলেন।  পারিবারিক অনুভূতি ব্যক্ত করেন লেখকের সহোদর কবি দেলোয়ার হোসেন, দুই সন্তান তমাল আহমেদ শুভ ও সুদীপ্ত আনন্দ।
 
অধ্যাপক ঝর্না রহমান তাঁর দীর্ঘ বক্তিতায় পুরো বইটি নিয়ে চমৎকার আলোচনা করেন। ছাত্র-ছাত্রী এবং উপস্থিত সবাই মুগ্ধ হয়ে তাঁর কথা শোনেন। ড. মাহবুবুল হক বলেন, বইয়ের পাঁচটি অংশ,  এর মধ্যে সেরু অংশটি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। এটা নিয়ে দারুণ একটা ছবি হতে পারে।

 লেখকের সহোদর কবি দেলোয়ার হেসেন খান বলেন, তাঁকে ( শাহজাহান মিয়া) সারা জীবনই পড়াশোনার মধ্যে থাকতে দেখেছি। এ বইটি পড়ে আমি খুবই অভিভূত। বুকের সঙ্গে বইটি জড়িয়ে ধরেছি। এ বই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে। অত্যন্ত সাহিত্য সমৃদ্ধ বই।

মুজিব রহমান বলেন, লেখক যখন প্রথম এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে আসছিলেন তখন লাল টকটকে শিমুল ফুল তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল৷ বইটি লিখে তিনি তাঁর শ্রেষ্ঠ জবাব দিয়েছেন৷ বইটি শ্রীনগরের ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে৷ তিনি এই বইয়ে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ও ঘটনার কথা  লিখেছেন৷ প্রতিষ্ঠানের পূর্ব অংশের ভূস্বামী অম্বিকা সাহা। ১৯৪৬ এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সেই একই বছর শোকে, দুঃখে অম্বিকা সাহার  মৃত্যু, বাকি সদস্যরা ধীরে ধীরে ভারতে চলে গেলেও, থেকে যান বিধবা পুত্রবধু সরযুবালা ও বিধবা কন্যা যামিনিবালা৷ সরযুবালা পুত্রের অভাব মিটিয়েছিলেন লেখককে ভালবেসে৷ বইটি জুড়ে আরো অনেকের ভালবাসার স্মৃতিচারণও লেখক করেছেন৷ বইটির প্রথম অংশ তাঁর শৈশবের বন্ধু সেরুকে নিয়ে লেখা৷ দ্বিতীয় অংশ লিখেন ব্রাহ্মণগাও স্কুলে শিক্ষকতা নিয়ে আর তৃতীয় অংশটুকু লিখেন রাঢ়ীখাল জেসি বোস ইনস্টিটিউশনে প্রায় বছর খানিকের চাকরিকাল নিয়ে৷

 প্রধান অতিথি ডা. আব্দুল মালেক ভূঁইয়া বইয়ের কিছু অংশ পড়েন, যেখানে তাঁর শৈশবের পরিচিত মানুষগুলো রয়েছে। লেখক তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমি অভিভূত। আমার জীবনের  এক পরম পাওয়ার দিন। আমি দেশের অনেক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছি, কিন্তু শিক্ষকতা জীবনের শুরুতে যে অল্পকিছু দিন, মাত্র আট মাস এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি সেই সময়কে আমার এই গ্রন্থে সংক্ষেপে ধারণ করেছি । পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন কবি, লেখক, গবেষক সুমন্ত রায়। প্রধান অতিথি প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরির জন্যে ২০ কপি এবং লেখক নিজে ১০ কপি বই উপহার দেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত