সাংবাদিক রোজিনার জামিন হওয়ায় আমিও সন্তোষ প্রকাশ করছি: তথ্যমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২১, ১৫:৫৬ |  আপডেট  : ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০১

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রোজিনার (সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম) জামিন হওয়ায় আমিও সন্তোষ প্রকাশ করছি। কারণ রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের কোনো বিরোধিতা করেনি। অর্থাৎ রাষ্ট্রপক্ষ চেয়েছে তার জামিন হোক।

রোববার (২৩ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সংগঠন বিএফইউজে, জাতীয় প্রেসক্লাব, ডিইউজে, ডিআরইউ, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার এবং বিএসআরএফের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আমি আশা করব, জামিন হওয়ার পর সমস্ত ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। আপনাদের মনের ক্ষোভ ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছেন। আপনারা আবার আগের মতো কাজে ফেরত যাবেন, কাজকর্ম করবেন সেটিই আমাদের প্রত্যাশা। আমাদের কাজ করতে হবে, একই সঙ্গে আইনও মানতে হবে।

তিনি বলেন, আমি নিজে যদি ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের অফিসে গিয়ে আমি যদি তাদের অনুমতি ছাড়া তাদের কোনো গোপন নথি থেকে কোনো কাজগপত্র নিই, সেটি নিশ্চয়ই বেআইনি এবং অপরাধ। সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। কী ঘটেছিল সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য হলো- এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল তাই তারা মামলা করেছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নই, তাই প্রথমে থেকেই বিষয়টিকে সেভাবে দেখার জন্য অনুরোধ করেছি। নিরপেক্ষ তদন্ত যেন হয় সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকব। তার (রোজিনা) সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ করা হলে সেটিও তদন্তে আসবে।

গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়ায় আইন মন্ত্রণালয় কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। শিগগিরই সেটি চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই আইন পাস হলে সব সাংবাদিক সুরক্ষা পাবেন। এই আইনের আলোকে সম্প্রচারের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়া যাবে।

তিনি বলেন, যেসব পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয় না, সেখানে যাতে সরকারি বিজ্ঞাপন না যায়। ভৌতিক প্রচার সংখ্যা ডিএফপিতে আছে, সেটি সংশোধনের কাজ চলছে। আসলে প্রচার সংখ্যা কত, সেটি তদন্ত করে বের করেছি। এখানে শৃঙ্খলা আনতে কাজ করছি।

সাংবাদিকদের সঠিকভাবে বেতনভাতা না দিলে তারা সরকার থেকে যে সুযোগ-সুবিধা পান সেটি দেওয়া হবে কি-না, তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন দিয়ে গঠিত হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আছে, শুধু সার্বক্ষণিক এমডি নেই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে কথা বলে কিছু কর্মচারী নিয়োগসহ সার্বক্ষণিক এমডি নিয়োগের চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে সাংবাদিকদের সুরক্ষার বিষয় অনেকাংশে নিরসন হবে। সাংবাদিকদের ওপর কোনো আইনের যাতে অপপ্রয়োগ না হয়ে সে বিষয়ে আমিও একমত। যেকোনো আইনের অপব্যবহারের সুযোগ থাকে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন অনেক সাংবাদিকের ক্ষেত্রে অপব্যবহার হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি ফেসবুক পেজ থেকে রোজিনাকে নিয়ে কিছু খণ্ডিত ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে- সাংবাদিকরা বিষয়টি অবহিত করল মন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

গত সোমবার (১৭ মে) পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় তাকে আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ৯টার দিকে তাকে সচিবালয় থেকে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। ওই রাতেই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। পরদিন সকালে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে তোলা হয়। আদালত রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। 

‘গুপ্তচরবৃত্তি’ ও ‘রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের দখলে রাখার’ অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে যে মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে অর্থাৎ অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টটি প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো একটি আইন। তবে রোববার এ সাংবাদিককে জামিন দিয়েছেন আদালত। তবে এ জামিন আদেশ আসার আগে পাঁচদিন তাকে কারাগারে কাটাতে হয়েছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত