সকালে বোনকে নিতে এলো ভাই বিকেলে মিললো লাশ

  শফিক স্বপন, মাদারীপুর  :

প্রকাশ: ২ মে ২০২১, ০৯:০১ |  আপডেট  : ১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৫

মাদারীপুরের শিবচরে সকালে বোনকে শশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে নিয়ে যেতে আসলো ভাই। বোন জামাই বাড়ি না থাকায় ফিরে গিয়ে বিকেলে আবার বোনকে নিতে এসে পেলো বোনের লাশ। খবর পেয়ে পুলিশ বসত ঘর থেকে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে । ওই গৃহবধূর পরিবারের দাবী তাকে হত্যা করে লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা গৃহবধূর স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামের দাদন শেখের মেয়ে রেশমার (২০) সাথে একই উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের তাহের ফকির কান্দি গ্রামের ধলু জমাদ্দারের ছেলে ঠান্ডু জমাদ্দারের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী, শশুর, শাশুড়ীর সাথে রেশমার মনমালিন্য চলছিল। এতে প্রায়ই রেশমার সাথে তার স্বামী ঠান্ডুর ঝগড়া হতো। রেশমাকে ঠান্ডু মারধরও করতো বলে রেশমার পরিবারের অভিযোগ। শনিবার সকালে রেশমাকে বাবার বাড়ি নিয়ে যেতে তার ভাই মুনকির শেখ ঠান্ডুদের বাড়িতে আসে। বোনকে বাড়ি নিয়ে যাবে বলে রেশমার শাশুড়ীর কাছে বলে। ঠান্ডু বাড়ি নেই অজুহাতে রেশমার শাশুড়ী তাকে পরে আসতে বলে। তাই মুনকির একই গ্রামে নানা বাড়িতে চলে আসে। এদিকে স্বামী ঠান্ডু বাড়ি আসার পর সব শুনে রেশমাকে বাবার বাড়ি যেতে নিষেধ করে। এনিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ঠান্ডু বাড়ি থেকে বাইরে চলে যায়। এদিকে রেশমার ভাই মুনকির বিকেলে আবার আসে রেশমাকে নিতে। এসময় রেশমাকে অনেক ডেকেও ঘরের ভিতর থেকে কোন সাড়া না পেয়ে মুনকিরসহ স্থানীয়রা দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ঘরের আড়ার সাথে রেশমার ঝুলন্ত লাশ দেখে। এ খবর আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা কুতুবপুর বাজার থেকে স্বামী ঠান্ডুকে আটক করে রেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মিরাজুল হোসেনসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করে স্বামী ঠান্ডুকে আটক করে। 

নিহত রেশমার ভাই মুনকির শেখ বলেন, সকালে আমার বোনকে নিতে আসলে বোন জামাই ঠান্ডু বাড়ি না থাকায় আমার বোনের শাশুড়ী আমাকে চলে যেতে বলে। বিকেলে আসলে আমার বোনের ঘর বাইরে থেকে শিকল আটকানো দেখি। পরে দরজা খুলে ভিতরে গিয়ে আমার বোনের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখি। আমার বোনকে ওরা মেরে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।

নিহতের বাবা দাদন শেখ বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে তার শাশুড়ী অনেক কষ্ট দিতো। এনিয়ে জামাই ঠান্ডুর সাথে প্রায়ই রেশমার ঝগড়া হতো। কিন্তু এভাবে আমার মেয়েকে ওরা পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলবে এটা ভাবিনি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মিরাজুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা গৃহবধূর স্বামীকে আটকে আমাদের হাতে সোপর্দ করেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে প্রেরন করা হবে। তাহলেই হত্যা না আত্মহত্যা তা জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা মনে হচ্ছে।  

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত