শ্রীনগরে ধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি মামলার পলাতক আসামী স্বপন মেম্বারকে গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ২০:২৫ | আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, ০০:৪০

ধর্ষণ- ও পর্ণোগ্রাফি মামলাসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামী মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর সদর ইউনিয়নের ০৬নং এয়ার্ড আঃলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য স্বপন মেম্বারকে দ্রুত গ্রেফতার ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার ধাইসার তিন রাস্তার মোড়ে শ্রীনগর ইউনিয়ন ও ৬নং ওয়ার্ড বাসীর আযোজনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, স্বপন শ্রীনগর এলাকায় এসে রাজমিস্ত্রীর হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করে। রাজমিস্ত্রী হওয়ার পর ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে মেম্বার হয়ে আঃলীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নারী কেলেঙ্কারী থেকে শুরু মাদক ব্যবসা,জুয়া এবং প্রতারনা সহ নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছিল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, শ্রীনগর উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি শফিক মোড়ল, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহবায়ক শামসুল ইসলাম, সদস্য সচিব শামসুল হক, ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম তালুকদার, সাবেক ইউপি সদস্য আঃ হামিদ তালুকদার সালাউদ্দীন সহ অনেকে ।
উল্লেখ্য ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফী মামলার বাদী সেলিনা আক্তারের সাথে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলার ঝাপুটিয়া গ্রামের ফারুক দেওয়ানের সাথে বিয়ে হয়। তিন বছরের মধ্য স্বামীর সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন সেলিনা। মামলার নোটিশ নিতে এসে পরিচয় হয় শ্রীনগর ৬ নং ওয়ার্ড আঃলীগের সভাপতি স্বপন মেম্বারের সাথে। সেলিনাকে মামলা না চালিয়ে মীমাংসার জন্য প্রস্তাব দেয় স্বপন মেম্বার। এরপর তার দোকানে বসে বিষয়টি ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় মীমাংসা করে দেন। ঐ সময় টাকাসহ সেলিনাকে স্বপন মেম্বার তার ভাড়াটিয়া বাড়ীর দ্বিতীয় তলায় বন্ধুর বউ সাজিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে দেন। পরদিন মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভুক্তভোগীকে নিয়ে স্বপন আদালতে যায় এবং মামলা তুলে নেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে একাধিক কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। পরে বাসায় এসে স্বপন জরুরী প্রয়োজনে দুইদিনের জন্য ধার চেয়ে দেড়লক্ষ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে। এরপর স্ত্রী দাবি করে তার সাথে ঘর সংসার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।
বিষয়টি বুঝতে পেরে ভুক্তভোগী কৌশলে বাসা ছেড়ে লৌহজং এলাকায় চলে যায়। সেখানে ১০ দিন পর সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বপন মেম্বার পুনরায় ঐ নারীকে তার ষোলঘর এলাকায় এনে বাসা ভাড়া করে স্বামী হিসেবে সংসার শুরু করে। এসময় তিনি ৩ মাসের গর্ভবর্তী হলে স্বপন মেম্বার ঔষধ প্রয়োগ করে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারীকে জোড়পূর্বক উলঙ্গ করে তার নগ্ন ছবি তুলে তাকে দেহ ব্যবসা করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। সে রাজী না হওয়ায় তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং স্বপন তার নিজ ভাড়াটিয়া বাসায় আটক করে রাখে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর বাবা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করেন। পরবর্তিতে সেলিনা বিঞ্জ আদালতের স্মরনাপন্ন হলে আদালত স্বপন মেম্বারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে দুটি মামলা নেয়ার নির্দেশ দেন । সে মোতাবেক শ্রীনগর থানায় গত ২২ জুন পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা নং ৩৩ এবং ধর্ষণ মামলা নং ৩৫
রুজু করা হয় । এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে প্রতারনা সহ একাধিক মামলা রয়েছে । তন্যদ্ধে উল্লেখ যোগ্য সি আর মামলা নং ৫৭৬/২০২৩ এবং ৫৭৭/২০২৩ ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত