শেষ হলো বিসিবির বার্ষিক সাধারণ সভা, সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন পাপন!
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২১, ২১:২২ | আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৪
উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হলো বিসিবির বার্ষিক সাধারণ সভা। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রেডিসন হোটেলে ২০১৭ থেকে ২০ সাল পর্যন্ত বোর্ডের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন সভাপতি নাজমুল হাসান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী। যেখানে জাতীয় ও যুব দলসহ মাঠের সাফল্য এবং কার্যক্রম উঠে আসে।
এছাড়া গত তিন অর্থবছরের আয়, ব্যয় ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রধান অর্থ কর্মকর্তা। চলতি অর্থবছরে বিসিবির বাজেট পর্যালোচনার পর অনুমোদন পেয়েছে সাধারণ সভায়।
সারা দেশের ১৬৬ কাউন্সিলর সুযোগ পান রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনের এজিএম-এ যোগ দিতে। যেখানে পরিচালনা পরিষদের ভুল-ত্রুটি, অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরার সুযোগ থাকে।
এর আগে ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর হয়েছিল সবশেষ এজিএম। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বার্ষিক সাধারন সভা প্রতিবছর হবার কথা। তবে গত ১৪ বছরে যা হয়েছে মাত্র তিনবার।
সরে দাঁড়াচ্ছেন পাপন
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পদে নির্বাচন না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিসিবির বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিসিবি সভাপতি।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আগামী মাসেই শেষ হতে চলেছে বর্তমান কমিটির মেয়াদ। এরপরই নির্বাচন। আবারও কি সভাপতি পদে দেখা যাবে যাবে পাপনকে।
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১ বা দুই তারিখ বোর্ড মিটিংয়ে। নির্বাচন নিয়ে একটু ভিন্নতা পাবেন আপনারা। এটাতে সন্দেহ নেই। এবারের নিবার্চনটা অন্যগুলোর তুলনায় আলাদা হবে।
এরপর বিসিবি সভাপতি জানান, ডাক্তারের পক্ষ থেকে আমাকে বারবার বলা হয়েছে যে ক্রিকেট থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দূরে সরে যেতে। অন্তত বোর্ডে থাকলেও এই জিনিসগুলো যেন না করি। মাঝখানে এক বছর আমি এটার সাথে ছিলাম না, ভালোই ছিলাম। কিন্তু এখন আবার টের পাচ্ছি, অনেক সময় নিয়ে নিচ্ছে ক্রিকেট।
পাপন বলেন, ‘ক্রিকেটটা অনেক বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছে। জালাল ভাই গিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড, (আহমেদ সাজ্জাদুল আলম) ববি ভাই গেলেন জিম্বাবুয়ে… উনারা জানেন। সবসময় খেলা তো দেখছিই। এর বাইরেও সার্বক্ষণিক (উনাদের থেকে) খোঁজখবর নিয়েছি আমি। সবার খোঁজ নেয়া, টিম নিয়ে কথা বলা- এ জিনিসটা যে আমার শুরু হয়েছে, আসলে এটা অনেক সময় নিয়ে নিচ্ছে আমার।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ দল যখন হারে, তখন সেটি মেনে নিতে পারেন না বিসিবি সভাপতি। তার তখন এতোটাই মেজাজ খারাপ হয় যে, পরিবারের সদস্যরাও কাছে আসতে পারে না। মূলত দলের প্রতি নিজের ভালোবাসা বোঝাতেই এ কথাটি বলেছেন পাপন।
পাপন বলেন, ‘আমার একটা খারাপ দিক হলো বাংলাদেশ হারলে আমি মেনে নিতে পারি না। বাংলাদেশ হারলে অনেক মেজাজ খারাপ হয়। আমার বউ-বাচ্চারা কেউ আমার সামনে আসে না। এতটা খারাপ লাগে…। এটা আসলে অনেক বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছে, যা নিয়ে আমার আগে ধারণা ছিল না।’
প্রায় ৯ বছর ধরে বিসিবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পাপন। আগামী অক্টোবরে হবে বোর্ডের নতুন নির্বাচন। সেখানেও তার জয়ের দিকেই পাল্লা ভারি। কিন্তু চিকিৎসক তাকে বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যেতে। দায়িত্বে থাকলেও মাত্রা কমিয়ে নিতে বলা হয়েছে তাকে।
বাংলাদেশেও দেখা যাবে দুটি ভিন্ন জাতীয় দল
ছায়া জাতীয় দল নয়, এবার দুটি ভিন্ন জাতীয় দলই গড়বে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)- এমনটাই জানিয়েছেন দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থাটির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
সেখানেই নিজের বক্তব্য দেয়ার সময় বিসিবি প্রেসিডেন্ট এ তথ্য জানান। একইসঙ্গে তিনি নতুন মাঠ তৈরি, বায়োবাবলের সফলতা এবং টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডের গভীরতা নিয়েও কথা বলেছেন।
নাজমুল হাসান পাপন বলেন, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে খুব জলদি দুটি ভিন্ন জাতীয় দলের বিরুদ্ধে একসাথে মাঠে দেখা যাবে বাংলাদেশের দুটি ভিন্ন দল। বিসিবি নিজের অর্থায়নেই মাঠ গড়তে প্রস্তুত। যেকোনো ব্যক্তিগত প্রপার্টি অথবা মানানসই জমি পেলেই বিসিবি সেটা অধিগ্রহন করে মাঠ বানানোর কাজ শুরু করবে।
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং বাংলাদেশের মাটিতে আয়োজিত টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়েও কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি। বায়োবাবল আয়োজন এবং রক্ষনাবেক্ষণে পটু বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া, তাও জানাতে ভোলেননি নাজমুল হাসান পাপন। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডের গভীরতা প্রসঙ্গে তার মত, দলে কাকে রেখে কাকে খেলাবেন তা নিয়েই মধুর সমস্যায় পড়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত