শাহ আবদুল করিমের গানের কপিরাইট সত্ত্ব পরিবারের কাছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২২, ১৫:৫০ |  আপডেট  : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:৫৩

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের কপিরাইট আইনের ৭৮ ধারায় উল্লেখ আছে, গীতিকার কিংবা সুরকারের অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানের ওয়েলকাম টিউনে, টেলিভিশনে, বেতারে কিংবা ইউটিউবে তাঁদের গান প্রচার করা যাবে না। বাউল শাহ আবদুল করিমের মৃত্যুর পর পরিবারের অনুমতি ছাড়া তাঁর গান বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করে অনেকে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ কামালেও কানাকড়ি পায়নি তাঁর পরিবার।

বিষয়টি আমলে নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে আবদুল করিমের ৪৭২টি গানের মেধাস্বত্ব নিবন্ধন করে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস। গানগুলো পরে ‘shahabdulkarim.com’ নামের ওয়েবসাইটে সংরক্ষণ করা হয়েছে। কপিরাইট অফিসের সাবেক রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে গান সংরক্ষণের জন্য ওয়েবসাইট উন্নয়নসহ কারিগরি সহায়তা দিয়েছে জেডএম স্টুডিও।

প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার, সংগীতশিল্পী জুয়েল মোর্শেদ জানান, এখন কেউ করিমের গান করতে চাইলে কিংবা কোথাও বাণিজ্যিকভাবে পরিবেশন করতে চাইলে তাঁর পরিবারের অনুমতি নিতে হচ্ছে। তাঁর সুর কিংবা গান ইউটিউব, ফেসবুকে ব্যবহার করলে আইন অনুযায়ী গানের গীতিকার ও সুরকার হিসেবে স্বত্ব বাবদ প্রাপ্য অর্থ আবদুল করিমের পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে। গত ৮ মাসে ১৫ লাখের বেশি টাকা তাঁর পরিবারকে দেওয়া হয়েছে।

কপিরাইট অফিসের বাইরে বিটিভি থেকে আবদুল করিমের গান প্রচারের জন্য স্বত্ব বাবদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা পেয়েছে তাঁর পরিবার। বিটিভির মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন জানান, ভবিষ্যতেও আবদুল করিমের গানের স্বত্ব বাবদ প্রাপ্য অর্থ প্রদান করা হবে। বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভি থেকেও এক লাখের মতো অর্থ পেয়েছে তাঁর পরিবার।

কপিরাইট আইনের ৮২ (১) ধারায় বলা আছে, স্বত্বাধিকারীর অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে কোনো গান পরিবেশন করলে তা কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে, ইচ্ছাকৃতভাবে আইনের লঙ্ঘন করলে দণ্ডের বিধানও রয়েছে। আবদুল করিমের ছেলে বলছেন, ‘আবদুল করিমের গান পরিবেশনে আমাদের কোনো আপত্তি নাই। শুধু গানের স্বত্ব থেকে প্রাপ্য অর্থ যেন আমাদের দেওয়া হয়।’

শাহ আবদুল করিমের আগে প্রয়াত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর গান সংরক্ষণ করে কপিরাইট অফিস। তাঁর গান থেকেও স্বত্ব বাবদ প্রাপ্য অর্থ তাঁর পরিবারকে দেওয়া হয়েছে।

শাহ আবদুল করিমের শিষ্যদের কণ্ঠে মূল সুরে তাঁর গানগুলো রেকর্ড করে সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন করিমপুত্র শাহ নূর জালাল।

সরকারি আয়োজনে না হলেও ‘স্বাধীন মিউজিক’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে আবদুল করিমের ৫০টি গান মূল সুরে নতুনভাবে শ্রোতাদের সামনে হাজির করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মেহের আফরোজ শাওন, ইমরান মাহমুদুল, কনাসহ বেশ কয়েক শিল্পী এ আয়োজনে কণ্ঠ দিচ্ছেন।

শাহ আবদুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন তিনি।


 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত