পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা না থাকায়

লৌহজংয়ে কৃষি জমি বাঁচাতে কৃষকের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

   লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২২, ১৯:২০ |  আপডেট  : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৯

পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ও এক মাএ খানটি ভরাট করে দখল নেয়ায় জলাবদ্বতার সৃষ্ঠি হচ্ছে কৃষি জমি গুলো। লৌহজং উপজেলার খিদির পাড়া ও গাঁওদিয়া ইউনিয়নের খেদের পাড়া, কাজিরগাঁ, পূর্ববুড়দিয়া বনসেমন্ত গ্রামের ৫টি বিলের প্রায় ৫শ’ একর কৃষি জমি গত ৪ বছর যাবত জলাবদ্বতার সৃষ্ঠি হওয়ায় কোন ফসল না করতে পারায় এসব কৃষি জমি অনবাদি হয়ে পরায় কৃষকরা কৃষি কাজে তাদের মনোবল হারাচ্ছে। 

খাল খনন ও কৃষক বাচাঁও এই লক্ষে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে খাল দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন প্রায় ৫'শ একর জমির মালিকানাধীন ৫টি গ্রামের কৃষকেরা। উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের খেতেরপাতা, খলাপাড়া, বন সেমন্ত, কাজিরগাও গ্রামের একমাত্র পানি নিষ্কাশনের ভরসার খালটি প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। এতে এসকল গ্রামের কৃষি জমির পানি নামতে পারছে না। ফলে কোন ধরনের চাষাবাদ করতে পারছে না কৃষকেরা। যার কারণ কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এর প্রতিবাদে ও দ্রুত খাল দখল মুক্ত ও খননের দাবিতে বুধবার দুপুরে অনাবাদি জমিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন কৃষকরা। তাদের দাবি আবাদযোগ্য জমি চাই।

জানা যায়, উপজেলার বেশিরভাগ খালগুলো পলি পরে ভরাট ও প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় দেখা যায় উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি জুলহাস বেপারী সরকারি পাকা কালবার্ট/ব্রিজ ভেঙে খাল ভরাট করেছে। ফলে জমিতে আটকে থাকা পানি সঠিক সময় নামতে পারছে না।

কৃষক ওবায়দুল ইসলাম হিমু, সুলতান বেপারী জানান, গত ৩/৪ বছর যাবত আমরা এ জমিতে কোন কিছু আবাদ করতে পারছি না। আগে প্রথমে আলু রোপন করতাম তারপর ধান, তিল, ভুট্টা, সরিষাও রোপণ করেছি। এ প্রভাবশালী খাল দখলদারদের কারণে আজ আমরা কৃষি পেশা থেকে অন্য পেশার যেতে বাধ্য হচ্ছি। আলী, সেলিম, দুলাল, মন্নাফ হাওলাদারসহ আরও কৃষকরা জানান, আমাদের এখানে প্রায় ৫শ একর কৃষি জমি রয়েছে। 

কিন্তু এখন সারাবছর পানি জমে থাকে। অনাবাদি অবস্থা দেখে বুকটা ফেটে যায়। সরকারের কাছে দাবি যেনো দ্রুত প্রায় ২ কিলোমিটারের খালটি দখল মুক্ত করুক তার  সাথে খননের ব্যবস্থা করুক। এতে আমরা কৃষকেরা বাঁচবো। দেশের কৃষিখাতে ক্ষতি কমবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি জুলহাস বেপারী জানান, এখানের যে ব্রিজটি ছিলো সে ব্রিজ দিয়ে গাড়ি যেতে পারতো না। তাই ভেঙে রাস্তা নির্মাণ করেছি। ইউএনও সাহেব এসে দেখে গিয়েছে। সে আশ্বাস দিয়েছে এখান দিয়ে বক্স কালবার্ট নির্মাণ করা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম জানান, এ খালগুলো দখলমুক্ত করার জন্য ইউএনও বরাবর লিখিত চিঠি প্রেরণ করেছি। ইউএনও, ইঞ্জিনিয়ারসহ আমি পরিদর্শনও করেছি। কেনো খালটি খনন হচ্ছে না এ বিষয় আমি বলতে পারবো না। তবে খালগুলো দখলমুক্ত ও খনন করা অতি জরুরি। তিনি আরও জানান, লৌহজংয়ে ৮ হাজার ২১৫ হেক্টর কৃষি জমিতে আবাদ করা হতো। এখন ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আবার করা হচ্ছে। বাকি ১ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি অনাবাদি অবস্থায় ও নদীতে ভেঙে গেছে।

 ফলে কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। নদী, ভাঙন, খাল দখলের কারণে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে কৃষিখাতে। কৃষিক্ষাতকে পূর্নউদ্বার করতে হলে আমাদের প্রথমত খাল গুলো অবমুক্ত করতে হবে এবং খাল খনন এখন একটি যুক্তিক দাবি কৃষকের ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত