রাতের অন্ধকারে ভয়ংকর সান্তাহারে নির্মাণাধীন রেল সেতু
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৩, ১১:৩৬ | আপডেট : ১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৭
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার জংশন স্টেশন এলাকায় ঝুঁকিপূর্ন রেল সেতুর নির্মাণের কাজ চলছে। যার কারণে সকল ট্রেনের গতিসীমা সীমিত করা হয়েছে। সেতুর সামনে গিয়ে থামতে হচ্ছে এই রুটে চলাচলরত সকল ট্রেনকেই। তারপর গতিসীমা কমিয়ে সেতু পার হচ্ছে সকল ট্রেন। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাতের ট্রেন থেকে চুরি করছে যাত্রীদের মালামাল। ছোঁ মেরে নিয়ে নিচ্ছে মোবাইলসহ দামি জিনিসপত্র।
এছাড়া লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যের ডিভাইস চুরির ঘটনায় এক চোরকে আটক করার ঘটনাও ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোক্তার হোসেন। আর এইসব ঘটনা ঘটছে আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের পান্নাথপুর এলাকায় নির্মাণাধীন রেল সেতুতে ট্রেন থামার পর। যেন রাতের ট্রেন চলাচল ভয়ংকর হয়ে উঠেছে সেখানে।
আবু সাইদ সাগর নামের এক ট্রেন যাত্রী বলেন, 'আমি কিছু দিন আগে ঢাকা থেকে রাতের ট্রেনে সান্তাহারে আসছিলাম। সান্তাহারে ট্রেন প্রবেশের আগে একটি ফাঁকা জায়গায় ট্রেন দাঁড়াই। এক মূহুর্তেই ট্রেন থেকে এক যাত্রীর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে লাফ দিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যায় এক চোর। পড়ে জানতে পারি সেখানে রেলসেতুর কাজ চলায় ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। দিনাজপুর থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন এক নারী ট্রেন যাত্রী। সেতুর ঐ স্থানে এসে ট্রেন থামার পর ঐ যাত্রীর হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় এক চোর। পাশাপাশি লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে আরও এক নারী ট্রেন যাত্রীর শ্রবণ শক্তির ডিভাইস চুরি হয়।
জানা যায়, চোরের একটি চক্র এই নিমার্ণাধীন রেল সেতুকে টার্গেট করে চুরি ও ছিনতাই করছে। তারা আগে থেকেই ট্রেনের যাত্রী সেজে ট্রেনের ভিতরে অবস্থান করে। তারপর তারা নারী যাত্রী ও ঘুমন্ত মানুষের মালামাল টার্গেট করে। রেল সেতুতে ট্রেন থামা মাত্রই যাত্রীদের মালামাল নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে যায় এই চক্রটি ৷ সচেতনরা বলছেন সংশ্লিষ্টদের তদারকির অভাবে ওই চক্রটি এমনভাবে চুরি বা ছিনতাই করছে তারা।
নিমার্নাধীন রেল সেতুর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত প্রতিনিধি ওসমান গনি বলেন, আমি রাতে এখানে থাকি না তবে একদিন শুনেছিলাম আমার গার্ডের কাছে থেকে যে এখানে রাতের কোনো এক ট্রেন থেকে চুরি হয়েছে। এ বিষয়টি সান্তাহার রেলওয়ে থানা পুলিশও জানে। রাতে এখানে গার্ড থাকার পরও কিভাবে চুরি হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার গার্ডেরা সেতুর কাছে থাকে। যেখানে ট্রেনের ইঞ্জিন থামে সেখানে গার্ডরা দাঁড়িয়ে থাকে। আর ট্রেন অনেক বড় তাই তাই পিছনের দিকে এমন ঘটনা ঘটলে জানা যায় না।
এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি মোক্তার হোসেন বলেন, নির্মানাধীন রেলসেতুতে চুরি হওয়ার ঘটনা আমার জানা নেই। তবে ট্রেনে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা দেওয়া আছে ট্রেন থামার পর দুইজন ট্রেনের দুই দিকে নেমে দাঁড়িয়ে থাকবে। এক নারী যাত্রীর ব্যাগ চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় ৩ মাস আগে এক নারীর ব্যাগ চুরি হয়েছিল। সেই ব্যাগে সাত লক্ষ টাকার শ্রবণ শক্তির ডিভাইস ছিল। পরে সেই ডিভাইস উদ্ধার ও চোরকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত