রংপুর বিভাগের উন্নয়ন বঞ্চিত একটি উপজেলার নাম কাউনিয়া
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:০৫ | আপডেট : ৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৮
রংপুর বিভাগের উন্নয়ন বি ত উপজেলার নাম কাউনিয়া। সাধারন মানুষ উন্নয়নের আশায় বুকবেঁধে এমপি নির্বাচিত করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুন্শি কে। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ায় মানুষের বুক ভরে যায়। স্বপ্ন দেখতে শুরু করে এলাকায় সমহারে উন্নয়ন হবে কিন্তু সে আশা গুরে বালি। সংবিধান স্বীকৃত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, বিনোদন, যোগাযোগ ব্যবস্থা, নদী ভাঙ্গন রোধে অন্য যে কোন উপজেলার চেয়ে পিছিয়ে কাউনিয়া। সরকার ঘোষিত প্রতিটি থানায় একটি করে সরকারী কলেজ হওয়ার কথা থাকলেও কাউনিয়া সদরের কলেজ সরকারী না হয়ে হয়েছে হারাগাছ থানায়। শিক্ষার মান উন্নয়নে নেই কোন পদক্ষেপ। শিক্ষার হার দিনদিন পিছিয়ে পড়ছে। প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা জটিলতার সমাধান হচ্ছে না দীর্ঘদিন। এলাকার উন্নয়নসহ শিক্ষা উন্নয়নে তিনি কখনই শিক্ষক সমাজ, সুধিজন, সাংবাদিকদের নিয়ে বসেননি। স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশা। পদাধিকার বলে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমিটির সভাপতি হলেও আজ পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নে কোন মিটিং করেননি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২টি এক্স-রে মেশিন থাকলেও ১টি চলে না ২১বছর, অন্যটি প্রায় ৯ বছর। ইসিজি মেশিন, রক্ত সংরক্ষনের রিফ্রিজেটর, ডিসটিলওয়াটার তৈরী মেশিন গুলো অচল দীর্ঘদিন থেকে। সাধারন রোগের পরীক্ষাও এখানে হয় না। তিনটি আধুনিক ওটি থাকলেও সমন্বয় হীনতার কারনে সেগুলো প্রায় অচল। বিদ্যুৎ চলেগেলে মেডিকেল ভুতুরে বাড়িতে পরিনত হয়। সার্জারির ডাক্তার থাকলে এনেসথেসিয়া ডাক্তার থাকে না।
খেলাধুলা নেই বললেই চলে। খেলার মাঠ উন্নয়নের কোন পদক্ষেপ নেই। খেলাধুলা ও বিনোদনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এলাকার যুবকরা বিপথ গামী হয়ে নেশার জগতে পা বারাচ্ছে। শিশুরা বিনোদনের কোন স্থান না পেয়ে শিক্ষা বিমুখ হচ্ছে। মেডিকেলে একটি শিশু পার্ক তৈরী করা হলেও এখন তার চিহ্ন পর্যন্ত নেই। তিস্তা সেতু এলাকায় একটি বিনোদন কেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধুর ম্যূারাল তৈরীর কথা শোনা গেলেও দৃশ্যত তা হয়নি। ধুমনদীকে পর্যটনের আওতায় আনার কথা শোনা গেলেও কবে হবে কেউ জানে না। যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা। কাউনিয়ার গুরুত্বপূর্ন থানা রোড ও টেপামধুপুর রোডের বেহাল দশায় দুর্ঘটনা নিত্যদিনের হলেও এসবের খবর তিনি রাখেন না। গ্রামীন রাস্তা কিছু পাকা করা হলেও নিম্নমানের কাজ করায় রাস্তা গুলো বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। বানিজ্যমন্ত্রী নিজে নির্বাচনকালীন সময়ে বলেছিলেন খলিলের ঘাটে ও মৌলভীবাজারে নতুন পাকা সেতু হবে কিন্তু নির্বাচিত হয়ে হয়তো ভুলে গেছেন। ওই এলাকার মানুষ চরম দুভোর্গে যাতায়ত করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কাউনিয়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে জনসভা করেছিলেন, সেই স্টেশন আজ পর্যন্ত আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। স্টেশনের চাল দিয়ে পানি পড়ে, ওয়েটিং রুমে গন্ধে বসা যায় না। বিশুদ্ধ পানির অভাব।
প্রতিবছর নদী ভাঙ্গনে শতশত হেক্টর ফসলী জমি, বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হলেও নদী ভাঙ্গন রোধে এলাকাবাসী বহু মানববন্ধন স্মারকলিপি তাকে প্রদান করেছে কোন কাজ হয়নি। ৩জন মন্ত্রী এসে পাকা বাঁধ নির্মাণের আশ্বসের বাণী শুনেয়ে গেছেন কিন্তু তার কোন কাজ হয়নি। তিস্তা মহপরিকল্পনার কথা শোনা গেলেও কবে হবে তা কেউ জানে না। কৃষকের উৎপাদিত পন্য বাজরজাত করনের কোন পদক্ষেপ নেই। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় দিনদিন শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কল-কারখানা তৈরীর কোন উদ্যোগ নেই। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা না হলে যুব সমাজ বিপথগামী হয়ে সমাজে সৃষ্টি হবে নানা সমস্যা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এখন হতাশাগ্রস্থ। সবমিলিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর এলাকার সাধারন মানুষ বলছে উন্নয়ন বি ত একটি উপজেলার নাম কাউনিয়া।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত