মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে রেডিমেড নৌকা বিকিকিনি

  নজরুল ইসলাম, শ্রীনগর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৩, ১৪:৫৬ |  আপডেট  : ১৭ মে ২০২৪, ০৩:৫০

শ্রীনগরে খাল-বিল, নদী-নালা ও বিভিন্ন বিলে বর্ষার আসতে শুরু করেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এই অঞ্চলে জোয়ারের পানি কিছুটা দেরিতে আসায় এখনও কোন কোন খালে-বিলে সম্পূর্ণরূপে পানি প্রবেশ করতে পারেনি। তবে বিখ্যাত আড়িয়ল বিলে এরই মধ্যে কোমর পানি হওয়ায় বিলজুড়ে বিভিন্ন নৌকা চলাচল করতে দেখা গেছে। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে বিভিন্ন স্থানে কাঠমিস্ত্রিদের কোষা নৌকা তৈরী কাজে ব্যস্ততা বেড়েছে। এসব নৌকা স্থানীয় হাটবাজারে কেনাবেচা হচ্ছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেউলভোগ হাটে রেডিমেট নৌকার পসরা সাজিয়ে বসেছেন নৌকা ব্যবসায়ীরা। সাপ্তাহিক হাটটিতে এই মৌসুমে প্রতিদিন নৌকার বিকিকিনি হচ্ছে। দৈনিক অন্তত শতাধিক বিভিন্ন সাইজের কোষা নৌকা বিক্রি হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন হাট সংশ্লিষ্টজনরা। তবে দেউলভোগ সাপ্তাহিক মঙ্গলবার হাটের দিনে বেশী নৌকা বিকিকিনি হয়। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী লৌহজং উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গোয়ালীমান্দ্রা হাট ও সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরায় নৌকা বিকিকিনি হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমকে ঘিরে স্থানীয় কাঠমিস্ত্রিরা বিভিন্ন স্থানে নৌকা শিল্প গড়ে তুলেছেন। নৌকার তৈরীর কাজে মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, শ্রীনগর সদর ইউনিয়নের দেউলভোগে একমাত্র বড় নৌকা হাটে দোকানীরা কোষা নৌকা বিক্রি করছেন। আকার ও কাঠের গুনগত মানের ওপর নির্ভর করে রেডিমেট নৌকার দাম হাকানো হচ্ছে। ৬-১০ হাজার টাকা মূল্যে ৮-১২ হাতি নৌকা বিক্রি করা হচ্ছে। সিরাজ মিয়া, জয়নাল হোসেন, সাইদুল ইসলামসহ কয়েকজন ক্রেতা জানান, আড়িয়ল বিল এলাকায় তাদের বসবাস। বর্ষার সিজনে বাড়ির গৃহস্থলী ও কৃষি কাজকর্ম নৌকার মাধ্যমে করতে হয়। বর্ষার কয়েক মাস গবাদি পশুর যাবতীয় কাঁচাঘাস সংগ্রহের জন্য প্রতিনিয়ত বিলে যেতে হচ্ছে। এতে নৌকার কোন বিকল্প নেই। পছন্দের নৌকা কিনতে হাটে এসেছেন তারা। নৌকা বিক্রেতা মো. মনির হোসেন, মিনার হোসেন, রুহুল আমিন, মো. আলেক, কালাচাঁন, তাঁরা পদ ও মো. সোহেল বলেন, রেডিমেড কোষা নৌকার দামদর করা হয় নৌকার সাইজ ও কাঠের মানের ওপর ভিত্তি করে। নৌকা তৈরীর উপকরণ সামগ্রী, কাঠমিস্ত্রি ও শ্রমিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে গত বছরের তুলনায় একটু বেশী দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এই লাভের হার খুবই সামান্য। রেডিমেড নৌকা বিক্রির পাশাপাশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কাঠের নৌকা তৈরীর অর্ডার নেওয়া হচ্ছে জানান তারা। কাঠমিস্ত্রিরা জানান, এই অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ বর্ষার কয়েক মাস যাতায়াতের জন্য নৌকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পরেন। অনেকেই রেডিমেড নৌকার খোঁজে আসছেন। এছাড়া দেউলভোগসহ জেলার বিভিন্ন সাপ্তাহিক হাটে এসব রেডিমেড নৌকা বিক্রি করছেন। নৌকা তৈরীর পাশাপাশি রেডিমেট ঘরও নির্মাণ করছেন তারা। বিক্রমপুরের ঐতিহ্যবাহী কাঠ-টিনের তৈরী নান্দনিক ঘরের কদর বাড়ছে।  

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত