বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে যাত্রী-দুর্ভোগ কমছেই না

  শফিক স্বপন মাদারীপুর

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫:৪৯ |  আপডেট  : ১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:২৮

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের যোগাযোগের অন্যতম বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে দুর্ভোগ কমছেই না।প পণ্য পরিবহন, যাত্রী দুর্ভোগ লাঘবসহ নানা কারণে চাহিদা থাকলেও সহসাই বাড়ছে না ফেরির সংখ্যা। গত সাত মাস ধরে এরুটে অচলাবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে মাত্র ৫টি ফেরি দিয়ে চলছে জরুরী অ্যাম্বুলেন্স, ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রী পারাপার।

বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন জানায়, ২০২১ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে পদ্মায় তীব্র স্রোত অব্যাহত থাকায় পদ্মা সেতুর তিনটি পিলারে চার বার ফেরির ধাক্কা লাগে। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন যাত্রী। ফেরির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেতুর পাইল ক্যাপ। এই পরিস্থিতিতে নৌপথে সব ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ১৮ আগস্ট দুপুরের পর থেকে এই নৌপথে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর কয়েক দফায় সীমিত আকারে ফেরি চালু ও বন্ধ করা হয়।’

পরে শরীয়তপুরের জাজিরার মাঝিকান্দি ঘাটে স্থান্তরিত করা হয় ফেরিঘাট। কিন্তু ওই রুটের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচর জেগে ওঠায় বন্ধই থাকে ফেরি চলাচল। এরপর গত ৭ নভেম্বর থেকে বাংলাবাজার-শিমুলীয়া রুটে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা ৫টি ফেরি দিয়ে জরুরী এ্যাম্বুলেন্স, ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রী পারাপার শুরু করা হয়।

তিনি আরো বলেন, ফেরি পারাপারে বন্ধ রাখা হয় পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রী বোঝাই পরিবহন। গত ৭ ডিসেম্বর থেকে মাঝিকান্দি-শিমুলীয়া রুটে ২৪ ঘণ্টা ফেরি সার্ভিস চালু হয়েছে। এরুটে দিনের বেলা ২টি ফেরি ও সন্ধার পর থেকে ৪টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। আগামী জুনে যেহেতু পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে, তাই এরুটে ফেরির সংখ্যা বাড়ানোর আর সুযোগ নেই।

বাংলাবাজার ঘাটে ঢাকা গামী  যাত্রী জাহাঙ্বগীর হোসেন বলেন, সামনে ঈদ। এখনও পদ্মা নদী এখন শান্ত। নৌ-চ্যানেলে ডুবোচরে ফেরি আটকে যাওয়ার ভয়ও নেই। তবুও বাংলাবাজার-শিমুলীয়া রুটে পারাপারে ফেরি সংখ্যা না বাড়ানো ও পণ্যবাহী ট্রাক এবং যাত্রীবাহী বাস পারাপার শুরু না করায় আমাদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এতো চাহিদার পরেও কেন ফেরি বাড়ছে না, বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।

রাজশাহীগামী  ট্রাক চালক  মফিজুল  বলেন, বাংলাবাজার ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। অথচ ঘাটেই বড় বড় ফেরি নোঙর করে রাখা আছে। কিন্তু কেন কোন অজ্ঞাত কারণে ফেরি চলাচল করছে না। তারাও বিষয়টি পরিস্কার করছে না। পদ্মা সেতু তো নিরাপত্তা রয়েছেই। আশা করবো, শীঘ্রই ফেরির সংখ্যা বাড়বেন। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।

মনির হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, আর কিছু দিন পরেই পদ্মা সেতু চালু হবে, তাই এখন যদি ফেরি সংখ্যা বাড়ানো হয়। তাহলে আমার নির্বিঘ্নে প্রাইভেটকারসহ ছোট যানবাহন নিয়ে পদ্মা নদী পার হতে পারি। কিন্তু কেন যে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না, বিষয়টি আমাদের কাছে অস্পষ্ট্য। তাই দ্রæত ফেরি বাড়ানোর দাবী করছি।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, পদ্মায় পানির উচ্চতা আগের তুলনায় কমেছে। সেই সাথে স্রোতও আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। তবে আগামী জুনে পদ্মা সেতু চালু হলে এরুটের তেমন প্রয়োজন থাকবে না। তাই আপাতত আর ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত